দুই বছর তিন মাস পর দেশে ফিরে ছুটি কাটিয়ে সৌদি আরব ফিরবেন জোবায়ের আহমেদ। সিলেট থেকে গতকাল শুক্রবার ঢাকায় এসেছেন। করোনার পরীক্ষাও করেছেন। আজ শনিবার বেলা ২টা ৫০ মিনিটে তাঁর ফ্লাইট। ভোর থেকে বিমানবন্দরে অপেক্ষা করছেন। কিন্তু জানেন না, ফ্লাইট যাবে কি না! তাঁর মতো আরও শতাধিক যাত্রী এমন অপেক্ষায় আছেন।
যাত্রীরা জানান, তাঁদের অনিশ্চয়তার শুরুটা ভোর থেকেই। আজ সকাল সোয়া ছয়টায় রিয়াদের উদ্দেশে বিমানের ফ্লাইটটি বাতিল হয়েছে। যাত্রীদের উদ্বেগের ভিত্তিতে বিমান বাংলাদেশে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আজ বিমানের চারটি ফ্লাইট ইতিমধ্যেই বাতিল করা হয়েছে। সন্ধ্যায় একটি ফ্লাইট ছাড়ার আশা করা হচ্ছে।
বিমানের জনসংযোগ বিভাগের উপমহাব্যবস্থাপক তাহেরা খন্দকার আজ সকালে এ বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সৌদি আরবে বিশেষ ফ্লাইট নামার অনুমতি পাওয়া যাচ্ছে না। ইতিমধ্যেই আবেদন করা হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যেই হয়তো এটি পাওয়া যাবে। অনুমতি পাওয়া গেলে সন্ধ্যা ছয়টায় জেদ্দার উদ্দেশে ফ্লাইটটি ছেড়ে যেতে পারে।
বিমানের জনসংযোগ বিভাগ জানায়, সৌদি আরবে সকাল সোয়া ছয়টা, বেলা ২টা ৫০ মিনিটের ফ্লাইট ছাড়াও দুবাইয়ের দুটি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে আজ। সকাল সোয়া ছয়টায় বাতিল হওয়া ফ্লাইটের ২০১ জন যাত্রীকে ইতিমধ্যেই বিমানের ব্যবস্থাপনায় হোটেল রাখা হয়েছে। অন্যদের ক্ষেত্রেও একই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর যাত্রী কম থাকায় দুবাইয়ের ফ্লাইটটি বাতিল করা হয়।
তাহেরা খন্দকার বলেন, বিশেষ ফ্লাইট চালুর ঘোষণার পর সব যাত্রীকে মোবাইলে বার্তা পাঠানো হয়েছে। বিমানের নিকটস্থ টিকিট বিক্রয় কেন্দ্রে গিয়ে তাঁদের যাত্রার তারিখ নিশ্চিত করতে বলা হয় এতে। কিন্তু আজ দুবাইয়ের দুটি ফ্লাইটের জন্য ২২ ও ২৫ জন যাত্রী যাত্রা নিশ্চিত করেছেন। অথচ এর একটি ফ্লাইটেই ৩০০ যাত্রীর টিকিট নেওয়া আছে। তাই যাত্রী কম থাকায় ফ্লাইটটি বাতিল হয়েছে। কাল রোববার আরব আমিরাত ও সৌদি আরবে বিমানের পাঁচটি ফ্লাইট আছে, সেগুলো সব ছেড়ে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এর আগে প্রবাসী কর্মীদের জন্য আজ থেকে পাঁচটি দেশে বিশেষ ফ্লাইট পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয় গত বৃহস্পতিবার। মন্ত্রীপর্যায়ের সভা থেকে নেওয়া সিদ্ধান্তে বলা হয়, আজ থেকে নির্ধারিত ফ্লাইটগুলোই বিশেষ ফ্লাইট হিসেবে যাওয়ার অনুমতি পাবে। পাঁচটি দেশে হচ্ছে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতার ও সিঙ্গাপুর।
ওই বৈঠকে অংশ নেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব, বেবিচক চেয়ারম্যান, বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে কঠোর বিধিনিষেধের আওতায় ১৪ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত সব আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে অন্তত ৩০ হাজার পুরোনো ও নতুন কর্মীর বিদেশে গিয়ে কাজে যোগদান অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে। জনশক্তি খাতের ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিদেশে যাওয়ার ফ্লাইট খুলে দেওয়ার দাবি জানান।