ধর্ম ডেস্ক,
রিয়া আরবি শব্দ। আভিধানিক অর্থ হলো- লোক-দেখানো কাজ, আত্মপ্রদর্শন, মুনাফিকী ও ভণ্ডামি ইত্যাদি। ইসলামি পরিভাষায় রিয়া বলে- সুনামের আশায় বা দুর্নামের ভয়ে সৎ আমল ও নেক কাজ করা, যাতে লোক ভালো বলে বা ভালো নজরে থাকা যায়।
রিয়া করা শরিয়তে সম্পূর্ণরূপে হারাম। শিরক হলো দুই প্রকার। শিরকে আকবার বা বড় শিরক। আর শিরকে আসগার বা ছোট শিরক। আর এ রিয়া হলো ছোট শিরক। রিয়া বা লোক-দেখানো ইবাদত প্রসঙ্গে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর যারা লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে তাদের ধনসম্পদ খরচ করে এবং আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে না (আল্লাহ তাদেরও ভালোবাসেন না) আর শয়তান কারও সঙ্গী হলে— সে সঙ্গী কতই না মন্দ।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ৩৮)
রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমি তোমাদের উপর যে জিনিষটিকে বেশি ভয় করি, তা হলো- ছোট শিরক। সাহাবিরা বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! ছোট শিরক কী? তিনি উত্তর দিলেন, রিয়া। আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন যখন মানুষকে তাদের আমলের বিনিময় দেবেন, তখন রিয়াকারীকে বলবেন- যাও দুনিয়াতে যাদের তোমরা তোমাদের আমল দেখাতে— দেখ তাদের নিকট কোনো সাওয়াব পাও কিনা”? (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ২৩৬৮১)
রাসুল (সা.) আরও বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি মানুষকে দেখানোর উদ্দেশ্যে নামায পড়ল সে শির্ক করল, যে ব্যক্তি মানুষকে দেখানোর উদ্দেশ্যে রোযা পালন করল সে শির্ক করল, যে ব্যক্তি মানুষকে দেখানোর উদ্দেশ্যে দান-সাদাক্বাহ করল সে শির্ক করল।’ (মিশকাত, হাদিস : ৫৩৩১ )
আরেকটি হাদিসে মাহমুদ ইবন লুবাইদ (রা.) বলেন, “আল্লাহর রাসুল (সা.) বের হয়ে এলেন এবং ঘোষণা করলেন, ‘হে জনগণ, গোপন শিরক সম্বন্ধে সাবধান!’ লোকেরা জিজ্ঞাসা করল, ‘হে আল্লাহ রাসুল, গোপন শিরক কী?’ তিনি বললেন, ‘যখন কেউ সালাতে দাঁড়ায় এবং লোকে তাকিয়ে দেখছে জেনে— তার সালাত সুন্দরভাবে আদায়ের চেষ্টা করে; এটাই গোপন শিরক।’ (ইবনু মাজাহ, হাদিস : ৪২৭৯; আহমাদ, হাদিস : ৩/ ৩০; ইবনু খুযাইমাহ, হাদিস : ৯৩৭ )
রিয়াসহ যেকোনো শিরক থেকে বাঁচার দোয়া
আবু মুসা বলেন, “একদিন আল্লাহর রাসূল (সা) এক ভাষণে বললেন, ‘হে লোকসকল! শিরককে ভয় করো। কারণ, এটি পিঁপড়ার চুপিসারে চলার চেয়েও গুপ্ত।’ তারা জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমরা কীভাবে এ থেকে বেঁচে থাকব— যদি তা পিঁপড়ার চলার চেয়েও গুপ্ত হয়?’ তিনি বললেন-
আরবি :
اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ أَنْ أُشْرِكَ بِكَ وَأَنَا أَعْلَمُ، وَأَسْتَغْفِرُكَ لِمَا لاَ أَعْلَمُ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজুবিকা আন উশরিকা বিকা ওয়া আনা আ’লামু, ওয়া আসতাগফিরুকা লিমা লা আ’লামু।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি সজ্ঞানে তোমার সাথে শিরক করা থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাই এবং যা আমার অজ্ঞাত, তা থেকেও তোমার কাছে ক্ষমা চাই।
বিএসডি/এএ