হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হকের ‘দ্বিতীয় স্ত্রী’ জান্নাত আরা ঝর্ণাকে জরুরিভাবে উদ্ধারের জন্য থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তাঁর বাবা মো. ওলিয়ার রহমান।
গতকাল সোমবার রাজধানীর কলাবাগান থানায় জিডিটি করেন ঝর্ণার বাবা ওলিয়ার রহমান।
ওলিয়ার রহমান জিডিতে অভিযোগ করেছেন, মামুনুল হকের অপকৌশলে ঝর্ণার সুখের প্রথম সংসার ভেঙে যায়। সেই সংসারে দুটি সন্তান রয়েছে। একপর্যায়ে জীবনের তাগিদে কাজের সন্ধানে ঝর্ণা ঢাকায় আসেন। উত্তর ধানমন্ডির একটি বাসায় ঝর্ণা বসবাস করছিলেন বলে তাঁকে জানানো হয়।
জিডিতে ওলিয়ার রহমান বলেন, ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের ঘটনার পর তিনি জানতে পারেন, তাঁর মেয়েকে ইসলামি শরিয়তের বিধান মোতাবেক বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করেন মামুনুল হক। ওই ঘটনার পর তিনি তাঁর মেয়ের ঢাকার ঠিকানায় হাজির হয়ে তাঁকে পাননি। ওলিয়ার রহমানের মনে বিশ্বাস জন্মেছে, মামুনুল হকের লোকজন তাঁর মেয়েকে অপকৌশল প্রয়োগ ও ভয়ভীতির মাধ্যমে অজ্ঞাত স্থানে আটকে রেখেছেন।
জিডিতে ওলিয়ার রহমান আরও বলেন, তিনি এই ঘটনা তাঁর নাতির কাছ থেকে জানতে পেরেছেন। এ বিষয়ে তিনিসহ আত্মীয়স্বজন উদ্বিগ্ন-চিন্তিত অবস্থায় দিন পার করছেন।
জিডিতে অভিযোগ করা হয়, মামুনুল হকের লোকজন যেকোনো মুহূর্তে তাঁর মেয়েকে অজ্ঞাত স্থানে অসৎ অভিপ্রায়ে আটকে তাঁকে হত্যার পর লাশ গুম করতে পারে বলে তাঁদের সন্দেহ হচ্ছে। এমন অবস্থায় তাঁর মেয়েকে জরুরিভাবে উদ্ধার করা আবশ্যক বলে জিডিতে উল্লেখ করেন তিনি।
ওলিয়ার রহমান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি সাবেক সেনাসদস্য। তিনি ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ছিলেন। তাঁকে সম্প্রতি দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ।
মামুনুল হক হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব, পাশাপাশি ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের মহাসচিব এবং জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক।
হেফাজতের বহুল আলোচিত নেতা মামুনুল হককে ১৮ এপ্রিল ঢাকার মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি এখন রিমান্ডে আছেন। মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে নতুন-পুরোনো মিলিয়ে অন্তত ১৮টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টে এক নারীসহ ঘেরাও হন মামুনুল হক। ওই নারীকে তিনি তাঁর ‘দ্বিতীয় স্ত্রী’ হিসেবে দাবি করেন। পরে মামুনুল হকের একাধিক বিয়ের খবর বের হয়। একের পর এক অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফাঁস হওয়ার পর ব্যাপক আলোচনার বিষয়ে পরিণত হন তিনি।