নিজস্ব প্রতিবেদক:
চট্টগ্রাম: দুই বন্ধু মেহেদী হাসান বাবু ও রবি দাশ। একজনের বাড়ি কুমিল্লার লাকসামে, অন্যজনের চন্দনাইশ উপজেলার মুহাম্মদপুরে।
দুজনই উচ্চ মাধ্যমিকে আশানুরূপ ফলাফল করতে না পারায় চাকরি করার সিদ্ধান্ত নেন।
পরিচিত অনেককে চাকরি দেওয়ার অনুরোধ করেও মিলছিল না সোনার হরিণ। গত জুলাই মাসের ২৩ তারিখ নগরের টাইগারপাস আমবাগান এলাকায় চাকরির বিষয়ে আলাপকালে দুই বন্ধুর সামনে এসে দাঁড়ান আব্দুর রাজ্জাক নামের এক লোক। তাদেরকে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দেন। এই ফাঁদে পা দিয়ে দুই বন্ধু প্রথমে ২ হাজার টাকা করে ৪ হাজার, এরপর দ্বিতীয় দফায় ৫ হাজার টাকা করে ১০ হাজার টাকা তুলে দেন আব্দুর রাজ্জাকের হাতে। এদিকে চলতি মাসের ১ তারিখ থেকে প্রায় প্রতিদিন কাঙ্ক্ষিত কর্মস্থল শিক্ষাবোর্ড দেখতে আসেন দুই বন্ধু।
বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টায় কথিত যোগদান পত্র নিয়ে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে আসেন তারা। পরে শিক্ষাবোর্ডের আনসার কমান্ডারের সঙ্গে কথা বলেন। শিক্ষাবোর্ডের উপসচিব বেলাল হোসেনকে বিষয়টি অবহিত করা হয়। তিনি যোগদান পত্র দেখে বুঝতে পারেন, তারা প্রতারণার শিকার।
উপসচিব বেলাল হোসেন বলেন, সকাল দশটার দিকে আনসার কমান্ডার আমাকে ফোন করে বলেন- দুই ব্যক্তি শিক্ষাবোর্ডে চাকরিতে যোগদান করতে এসেছেন। পরে আমার কার্যালয়ে তাদেরকে ডেকে আনি। তাদের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে দেখি, তারা প্রতারিত হয়েছে। এরপর আমি বিষয়টি চেয়ারম্যান মহোদয়কে অবহিত করি। পরে পাঁচলাইশ থানা পুলিশকে খবর দিলে, তারা দুই বন্ধুকে নিয়ে থানায় যান এবং বিষয়টি তদন্ত করে দেখার আশ্বাস দেন।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রদীপ চক্রবর্তী বলেন, ‘সকালে দুইজন শিক্ষার্থী অফিস সহকারী পদে চাকরিতে যোগদান করতে এসেছিলেন। আমার নকল স্বাক্ষর দিয়ে তাদেরকে যোগদান পত্র দেওয়া হয়েছে। তাদের জিজ্ঞেস করে জানলাম, প্রতারক চক্রের পাল্লায় পড়ে তারা প্রতারিত হয়েছে। আমরা আইনের আশ্রয় নিচ্ছি। ’
তিনি আরও বলেন, শিক্ষাবোর্ড থেকে এ ধরনের কোনও নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি আমরা দেইনি। তারা আমার যে স্বাক্ষর ব্যবহার করেছে, সেটি মূল স্বাক্ষরের সঙ্গে মিল নেই।
প্রতারিত মেহেদী হাসান বাবু বলেন, এইচএসসিতে আমরা ভালো ফলাফল করতে পারিনি। তাই দুই বন্ধু চাকরি করার সিদ্ধান্ত নিই। টাইগারপাস আমবাগানে প্রতারক আব্দুর রাজ্জাকের কথা বিশ্বাস করে জনপ্রতি ৭ হাজার টাকা করে মোট ১৪ হাজার টাকা দিয়েছিলাম। প্রথমে আমরা বিশ্বাস না করলেও তার কাছে চাকরির বিজ্ঞপ্তি দেখে দুই কিস্তিতে টাকা দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, আব্দুর রাজ্জাকের সহকারী রুহুল আমিন, তানজিম আহমেদ চৌধুরীও আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। তাদের হাতেই আমরা টাকা দিয়েছি।
বিএসডি/এএ