নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সম্পূর্ণ ভূমি সেবাকে দেশের জনগণের হাতের মুঠোয় নিয়ে আসার মাধ্যমে ভোগান্তি লাঘবে সরকার সম্পূর্ণ ভূমি ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজড করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। মানুষের যেন ভোগান্তির শিকার না হতে হয়, দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে বেড়াতে না হয়। ভূমি সেবা যেন হাতের মুঠোয় পায় সেই ব্যবস্থাই আমরা করতে চেয়েছি।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সেবাদানকারী সব দফতর ও সংস্থাকে একই ছাদের নিচে এনে জনগণকে এক জায়গা থেকে সব সেবা দেওয়ার জন্য ‘ভূমি ভবন’ ও ভূমি ডাটা ব্যাংকের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেছেন।
বুধবার সকালে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ভূমি মন্ত্রণালয় আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ভূমি ভবন ছাড়াও প্রধানমন্ত্রী উপজেলা ও ইউনিয়নের ভূমি অফিস, অনলাইন ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধ কার্যক্রম এবং ভূমি ডাটা ব্যাংকের উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠান থেকে ৯৯৫টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস এবং ১২৯টি উপজেলা ভূমি অফিস উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে শতভাগ মিউটেশন সম্পন্ন করার মাধ্যমে ভূমি ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজড করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। কেননা, মানুষ যেন অযথা হয়রানির শিকার না হন। মানুষের যেন ভোগান্তির শিকার না হতে হয়, দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে বেড়াতে না হয়। ভূমি সেবা যেন হাতের মুঠোয় পায় সেই ব্যবস্থাই আমরা করতে চেয়েছি।
তিনি বলেন, হাতের মুঠোয় ভূমি সেবা নিশ্চিত করতে অনলাইনে খতিয়ান সংগ্রহ, উত্তরাধিকার ক্যালকুলেটর, অনলাইন ডাটাবেজসহ ভূমিসেবার সকল ক্ষেত্রে অধিকতর ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। ই-মিউটেশন বাস্তবায়নের স্বীকৃতিস্বরূপ ভূমি মন্ত্রণালয় জাতিসংঘের ‘ইউনাইটেড নেশনস পাবলিক সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড-২০২০’ অর্জন করেছে।
ভূমি সচিব মোস্তাফিজুর রহমান অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন। সভাপতিত্ব করেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। অনুষ্ঠানে ভূমি মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম এবং প্রকল্পগুলোর ওপর পৃথক ভিডিও চিত্র পরিবেশিত হয়।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত ভূমি সংস্কার বোর্ড, ভূমি আপিল বোর্ড এবং ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদফতর ঢাকা শহরের ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় অবস্থিত। ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত বিভিন্ন দফতর, সংস্থা ছাড়াও ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন প্রকল্পের কার্যালয় ও একটি আধুনিক রেকর্ড রুমের সংস্থান এ ভূমি ভবন কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে। অফিসগুলো একই ভবনে অবস্থানের ফলে ভূমি সংক্রান্ত সেবাদান ও সেবাগ্রহণ প্রক্রিয়া সহজতর হবে।
ভূমি ভবন কমপ্লেক্সে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল, বঙ্গবন্ধু কর্নার ও কর্মজীবী মায়েদের সুবিধার্থে একটি ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন করা হয়েছে।
প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় প্রায় ১৮৪ কোটি টাকা। ২টি বেজমেন্টসহ মোট ১৩ তলা বিশিষ্ট মূল ভবনটির নির্মাণ এরিয়া প্রায় ৩২ হাজার ২শ’ বর্গ মিটার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ভূমি মন্ত্রণালয় পরিদর্শনের সময় ভূমি মন্ত্রণালয়ের সেবাদানকারী সব দফতর ও সংস্থাকে একই ছাদের নিচে এনে জনগণকে ‘এক জায়গায় সকল সেবা’ প্রদানের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে নির্দেশ দেন।
তার নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে একই স্থানে ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত দফতর ও সংস্থাসমূহের স্থান সংকুলানের জন্য ভূমি ভবন কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়।
বিএসডি/এমএম