ভারতের বাইরেও করোনাভাইরাসের টিকা উৎপাদনের পরিকল্পনা করছে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনার টিকা উৎপাদন করে অন্যান্য দেশে সরবরাহ করছে সেরাম। টিকা উৎপাদনে বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান এটি।
বিশ্বজুড়ে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় টিকার সরবরাহও বেড়ে গেছে। ফলে, টিকা সরবরাহের প্রতিশ্রুতি ঠিক রাখতে অন্যান্য দেশেও উৎপাদন করতে চায় পুনেভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিষয়টি জানিয়েছেন সেরামের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আদর পুনাওয়ালা।
আদর পুনাওয়ালা বলেন, ‘আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এ নিয়ে একটি ঘোষণা আসবে।’ পুনাওয়ালা গত সপ্তাহে বলেছিলেন, জুলাই মাসের মধ্যে টিকার মাসিক উৎপাদন ১০ কোটি ডোজে নিয়ে যেতে সক্ষম হবে সেরাম। এর আগে মে মাসের মধ্যে সেটি করা যাবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি।
আগামী ছয় মাসের মধ্যে সেরামের টিকার বার্ষিক উৎপাদন ২৫০ কোটি থেকে ৩০০ কোটিতে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী পুনাওয়ালা। ভারতে ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় আট দিন আগে দেশটির ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাজ্য। তবে তার আগেই তিনি লন্ডন সফর করেন।
ভারতে গতকাল শুক্রবার রেকর্ড চার লাখের বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মহামারির শুরু থেকে বিশ্বজুড়ে কোনো দেশে এক দিনে এত মানুষ আক্রান্ত হয়নি। গত ২৪ ঘণ্টায় ৩ হাজার ৫২৩ জন করোনায় মারা গেছেন বলে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
গত এপ্রিল মাসে ভারতে সবচেয়ে বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন। গত মাসে ভারতজুড়ে ৬৯ লাখ মানুষ আক্রান্ত হন। এক মাসেই মারা যান প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট ১ কোটি ৯১ লাখ ৬৪ হাজার ৯৬৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মোট মৃত মানুষের সংখ্যা ২ লাখ ১১ হাজার ৮৫৩।
করোনার সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করায় দেশটি তার স্বাস্থ্য খাতে সাম্প্রতিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। অক্সিজেন, জরুরি ওষুধ, হাসপাতালে শয্যার সংকটসহ নানা সমস্যায় দেশটির স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম।
দেশটিতে করোনা রোগীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে বাড়তে থাকায় চাপ সামাল দিতে হাসপাতালগুলো হিমশিম খাচ্ছে। শুধু অক্সিজেনের অভাবে অনেক রোগী মারা গেছেন। বিদেশ ও দেশের অন্য এলাকা থেকে অক্সিজেন এনে পরিস্থিতি মোকাবিলার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।