কৃষি ডেস্কঃ
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে মৌ চাষী আরিফুল ইসলাম চাকুরীর পিছনে না ছুটে বেকারত্বের অভিশাপ ঘুচাতে মৌ চাষে প্রশিক্ষণ নেয়। সফলও হয়েছেন। চলতি বছরে তিনি ১২ লাখ টাকার মধু বিক্রি করেছেন। পিতা-মাতা সহ ৫ সদস্যের সংসারের চাকা সচল রাখার পাশাপাশি ছোট ভাই বোনের লেখাপড়ার খরচ মিটাতে সক্ষম হচ্ছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মোরেলগঞ্জ উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের গড়ঘাটা গ্রামের মোকছেদ আলী খানের ছেলে আরিফুল ইসলাম খান ২০১৮ সালে কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে মৌ চাষ শুরু করেন। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) বাগেরহাট, খুলনা বিসিক ও পিরোজপুরের বিসিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র মৌ-চাষের উপর একাধিকবার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। শুরুতে ১৮টি বাক্স নিয়ে বানিজ্যিক ভিত্তিতে এপিস মেলিফেরা মৌ চাষের যাত্রা শুরু করেন। বর্তমানে মৌ চাষে তার ১৪৩টি বাক্স ব্যবহৃত হচ্ছে। এক একটি বাক্সে ৫০ হাজার মৌমাছি বাসা বাধঁতে পারে। তিনি এ চাষে জনবল হিসেবে ৪ বেকার যুবককে কর্মসংস্থানের সুযোগ দিয়েছেন। প্রতি মাসে তাদের ১০ হাজার করে ৪০ হাজার টাকা বেতন দেয়া হয়।
ভ্রাম্যমাণ মৌ চাষী আরিফুল ইসলাম বিভিন্ন জেলার নানা ধরনের ফুল ক্ষেতের পাশে এসব বাক্স স্থাপন করে মৌ সংগ্রহ করেন। সরিষা, ধুনিয়া, কালোজিরা, লিচু, বরই ফুল তরমুজ ক্ষেতের পাশে বাক্স স্থাপন ও ১৫-২০ দিন সেখানে অবস্থান করে মধু সংগ্রহ করেন। এ নিয়ে তিনি তিনি ৮৫ মণ মধু সংগ্রহ করেন।
লিচু ফুলের মধু প্রতি মণ ১৫ হাজার টাকা, সরিষা ফুলের মধু ৮ হাজার টাকা, তরমুজ ফুলের মধু ১৬ হাজার টাকা, কালোজিরা মধু ৩২ থেকে ৩৫ হাজার টাকা, ধুনিয়া ফুলের মধু ১৪-১৫ হাজার মণ দরে বিক্রি হয়। সাধারণ ফুলের মধু ৬’শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
আরিফুল ইসলাম খান জানান, ফুল ক্ষেতের পাশে মৌ চাষ করা হলে পরাগায়ন ১৫-২৫ ভাগ ফলন বৃদ্ধি পায়। পাশাপশি ক্ষতিকারক পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব কিন্তু ক্ষেত মালিকরা পরাগায়ন ও ফলন বৃদ্ধির সম্পর্কে অবহিত নয়। যার কারণে বিভিন্ন ক্ষেতের পাশে মৌ মাছির বাক্স স্থাপন করতে গেলে নানা প্রতিবন্ধকতায় পড়তে হয়। করোনাকালীন সময়ে তিনি কোনো প্রনোদনা কিংবা সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কোনো সহযোগীতা পাননি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তবে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে মধুর চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বিদেশে রপ্তানি করতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদি।
বিএসডি/এএ