গত শনিবার ও রোববার একাধিক দূরপাল্লার ক্রুজ মিসাইলের সফল পরীক্ষা করেছে উত্তর কোরিয়া। তবে দূরপাল্লার এসব মিসাইল পরমাণু অস্ত্র হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে যুক্তরাষ্ট্র। রোববার (১২ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার পরমাণু আলোচনা বর্তমানে স্থবির অবস্থায় রয়েছে। তবে এর মধ্যেই নিজেদের সামরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি ও প্রদর্শনের কাজ অব্যাহত রেখেছে পিয়ংইয়ং।
সোমবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যম দ্য কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) জানিয়েছে, সফলভাবে পরীক্ষা করা ক্রুজ মিসাইলগুলো ২ বছর ধরে তৈরি করা হয়। গত শনিবার ও রোববার চালানো পরীক্ষায় এসব মিসাইল ১৫০০ কিলোমিটার (৯৩০ মাইল) দূরের লক্ষবস্তুতে সফলভাবে আঘাত করে।
সফল পরীক্ষার পরে মিসাইলগুলো সমুদ্রে গিয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির বার্তাসংস্থাটি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের আশঙ্কা, মিসাইলগুলো পরমাণু পরীক্ষার অংশ হতে পারে।
এদিকে দূরপাল্লার ক্রুজ মিসাইলের সফল পরীক্ষার পর উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছে উত্তর কোরিয়া। দেশটি তাদের এই নতুন অস্ত্রকে ‘বিশাল তাৎপর্যপূর্ণ কৌশলগত অস্ত্র’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। দেশটির নেতা কিম জং উনের চাওয়া অনুযায়ী এটি দেশের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করেছে বলেও জানিয়েছে পিয়ংইয়ং।
গত কয়েকমাস ধরেই উত্তর কোরিয়ার সামরিক শক্তি আরও শক্তিশালী করার বিষয়ে জোর দিচ্ছেন কিম জং উন। কিছুদিন আগে তিনি জানিয়েছিলেন, দেশের বিজ্ঞানীরা একাধিক ব্যালিস্টিক মিসাইল তৈরি করেছে। যা উত্তর কোরিয়ার সামরিক শক্তি অনেকটা বৃদ্ধি করেছে।
এরপরেই গত মার্চ মাসে একটি স্বল্পপাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইলের পরীক্ষা করেছিল উত্তর কোরিয়া। যার কারণে দেশটির বিরুদ্ধে সেসময় বেশ কিছু নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এবার একাধিক দূরপাল্লার মিসাইলের পরীক্ষা চালালো দেশটি। এই পরিস্থিতিতে উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে দক্ষিণ কোরিয়া জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার মিসাইল পরীক্ষার বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোন এলাকায় দেশটি এই পরীক্ষা করেছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। মিসাইলের ক্ষমতা কতটা এবং এর সঙ্গে পরমাণু শক্তির সংশ্লিষ্টতা আছে কি না, সব কিছুই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একযোগে কাজ করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে দেশটি।
জাপানের প্রধান কেবিনেট সেক্রেটারি কাতসুনোবু কাতো সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, উত্তর কোরিয়ার একাধিক দূরপাল্লার ক্রুজ মিসাইলের সফল পরীক্ষার ঘটনায় টোকিও ‘উদ্বিগ্ন’। একইসঙ্গে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে জাপান কাজ করছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।