নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ-অষ্ট্রেলিয়ার মধ্যে ট্রেড অ্যান্ড ইনভেষ্টমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক অ্যারেঞ্জমেন্ট (টিফা) চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। এ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, বাংলাদেশ বিনিয়োগকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান। টিফা স্বাক্ষরের ফলে বাংলাদেশে অষ্ট্রেলিয়ার বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বাড়বে।
বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ এবং অষ্ট্রেলিয়ার মধ্যে টিফা স্বাক্ষর শেষে ভার্চুয়ালি এক সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে অষ্ট্রেলিয়ার পক্ষে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন অষ্ট্রেলিয়ার ট্রেড, ট্যুরিজম অ্যান্ড ইনভেষ্টমেন্ট মিনিষ্টার ডান টিহান।
ভার্চুয়াল সভায় সংযুক্ত থেকে অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নেন ঢাকায় নিযুক্ত অষ্ট্রেলিয়ার হাইকমিশনার জেরেমাই ব্রুয়ার, অষ্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ শফিউর রহমান।
এছাড়া অনুষ্ঠানে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, অতিরিক্ত সচিব (রপ্তানি) মো. হাফিজুর রহমান, অষ্ট্রেলিয়ার ডেপুটি হাইকমিশনার নার্দিয়া সিম্পসনসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলা হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য বিশেষ সুযোগ-সুবিধার প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত সেবা দেওয়া সহজ করা হয়েছে। বাংলাদেশ প্রায় ১৭ কোটি মানুষের একটি বড় বাজার। অষ্ট্রেলিয়ার বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে লাভবান হবেন।
তিনি বলেন, অষ্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশ অষ্ট্রেলিয়ায় ৮০৪.৬৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রপ্তানি করেছে, একই সময়ে ৫৯৬.৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করেছে। কোভিড-১৯ এর কারণে বিগত দুই বছর বাণিজ্য আশানুরূপ হয়নি।
টিপু মুনশি বলেন,উভয় দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। উভয় দেশের ব্যবসায়ীরা সফর বিনিময়ের মাধ্যমে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে পারেন। বাংলাদেশ সরকার এজন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা দিবে। আশা করা যায়, টিকফা স্বাক্ষরের ফলে উভয় দেশ উপকৃত হবে এবং বেসরকারি সেক্টরে আগ্রহ বাড়বে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ মুজিব জন্মমতবর্ষ উদযাপন করছে। অষ্ট্রেলিয়া পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে প্রথম এবং বিশ্বের মধ্যে চতুর্থ স্বাধীন বাংলাদেশের স্বীকৃতি প্রদানকারী দেশ। এজন্য বাংলাদেশ অষ্ট্রেলিয়ার প্রতি কৃতজ্ঞ। চলমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ এর মুখোমুখি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে কোভিড-১৯ মোকাবেলা করে যাচ্ছে। তিনি ভ্যাকসিন উৎপাদকারী দেশ হিসেবে অষ্ট্রেলিয়াকে মানবিক কারণ বিবেচনায় বাংলাদেশে কোভিড ভ্যাকসিন অনুদান হিসেবে সরবরাহের অনুরোধ জানান।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, অষ্ট্রেলিয়া বিগত ২০০৩ সালে থেকে বাংলাদেশকে ডিউটি ফ্রি এবং কোটা ফ্রি বাণিজ্য সুবিধা দিচ্ছে, এজন্য বাংলাদেশ কৃতজ্ঞ। আগামী ২০২৬ সালে এলডিসি গ্রাজুয়েশনের পরও অষ্ট্রেলিয়া বাংলাদেশকে দেওয়া বাণিজ্য সুবিধা অব্যাগত রাখবে এবং বিশ্ববাণিজ্য সংস্থায় এলডিসি গ্রুপের প্রস্তাবে সমর্থন থাকবে বলে আশা করছি। অষ্ট্রেলিয়া বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বড় রপ্তানির বাজার।
অনুষ্ঠানে অষ্ট্রেলিয়ার ট্রেড, ট্যুরিজম অ্যান্ড ইনভেষ্টমেন্ট মিনিষ্টার ডান টিহান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানান।
অষ্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ট বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, টিফা স্বাক্ষরের মাধ্যমে উভয় দেশের বিনিয়োগ ও বাণিজ্য বাড়বে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের পাশাপাশি আইসিটি, লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং প্লাস্টিক ও শিক্ষাসহ বেশকিছু সম্ভাবনাময় খাত রয়েছে।
বিএসডি/এমএম