উপাচার্য মেয়াদের শেষ কর্মদিবসে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) এম আবদুস সোবহান অবৈধ ও বিধিবহির্ভূতভাবে ১৪১ জনকে নিয়োগ দিয়েছেন। সেই অবৈধ নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে কারা জড়িত, তা তদন্ত করতে চার সদস্যের কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
আজ শনিবার সেই কমিটির সদস্যরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছেন। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছান।
এ তথ্য নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক আজিজুর রহমান শামীম। তিনি বলেন, তদন্ত কমিটির সদস্যরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছার পর প্রশাসন ভবনের উপাচার্য দপ্তরে যান। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের রুটিন দায়িত্বে থাকা উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমার সাহা রয়েছেন।
জানা যায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৪১ জনকে অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়েছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য সাবেক উপাচার্য এম আবদুস সোবহান। অ্যাডহক ভিত্তিতে গণহারে নিয়োগে দেওয়া হয়েছে শিক্ষক ৯ জন, সেকশন অফিসার ২৩ জন, সহায়ক কর্মচারী ২৪ এবং উচ্চ ও নিম্ন সহকারী ৮৫ জন।
এই নিয়োগ অবৈধ ঘোষণা করে গত ৬ মে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ইউজিসি’র সদস্য অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীরকে আহ্বায়ক করে এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্য হিসেবে রয়েছেন ইউজিসি’র সদস্য অধ্যাপক মো. আবু তাহের এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. জাকির হোসেন আখন্দ। এই কমিটিতে সদস্য সচিব করা হয়েছে ইউজিসি’র পরিচালক (পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়) মোহাম্মদ জামিনুর রহমানকে।
এই অবৈধ নিয়োগ ও অনিয়ম প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবেন কমিটির সদস্যরা। প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সাত কর্মবিদস সময় পেয়েছেন তারা।
যা আছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে
উপাচার্যের গণহারে অ্যাডহক নিয়োগকে অবৈধ ঘোষণা করে গতকাল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়য়র উপাচার্য প্রফেসর ড. এম আবদুস সোবহানের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের বিষয়ে ইতোপূর্বে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদনে উপাচার্যের বিরুদ্ধে নিয়োগ কার্যক্রমসহ আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর পত্রের মাধ্যমে প্রশাসনিক কারণে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ধরনের নিয়োগ কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত রাখার জন্য উপাচার্যকে অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু উপাচার্য আজ ০৬.০৫.২০২১ খ্রি. তারিখে তার শেষ কর্মবিদসে মন্ত্রণালয়ের ওই নির্দেশনা উপেক্ষা করে বিভিন্ন পদে অবৈধ ও বিধিবহির্ভূতভাবে জনবল নিয়োগ প্রদান করেছেন মর্মে মন্ত্রণালয় অবহিত হয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উদ্ভব, যা অনভিপ্রেত। বিদায়ী উপাচার্য কর্তৃক অবৈধ জনবল নিয়োগের বৈধতা প্রাপ্তির সুযোগ নেই বিধায় এতদসংক্রান্ত বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হলো।