নিজস্ব প্রতিনিধি:
ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় বিদেশে গিয়ে ২৩ শতাংশ নারী শ্রমিক এক বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই দেশে ফিরেছেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস)। এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি বলছে, ১৮ শতাংশ এক বছরের সামান্য বেশি সময় থেকেছেন। এছাড়াও ৫৫ শতাংশ নারী শ্রমিককে অনেকটা জোরপূর্বক দেশে ফেরত আসতে হয়েছে।
সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) ধানমন্ডিতে বিলসের সেমিনার হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে গবেষণা প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হয়।
গবেষণায় দেখা যায়, দেশে ফেরত আসা প্রতি ৩ জন নারী শ্রমিকের মধ্যে ১ জনের অর্থনৈতিক অবস্থা আগের চেয়ে অবনতি হয়েছে। তাদের মধ্যে সিংহভাগই ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন। ৮৫ শতাংশ তাদের বর্তমান কাজ নিয়ে হতাশাগ্রস্ত এবং ৫৭ শতাংশ তাদের জীবন ও জীবিকা নিয়ে চিন্তিত।
গবেষণায় অংশ নেওয়া ৩৮ শতাংশ নারী অভিযোগ করেছেন— বিদেশে যাওয়ার পরে তারা শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ৫২ শতাংশ নারী জানিয়েছেন, তাদের জবরদস্তিমূলক শ্রমে বাধ্য করা হয়েছে। ৬১ শতাংশ বিদেশে খাদ্য ও পানির অভাবে ভুগেছেন, ৭ শতাংশ যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিলস নেতারা বলেন, প্রত্যাবাসী অসহায় নারী শ্রমিকের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পুনর্বাসনের বিষয়ে গুরুত্ব নিয়ে কাজ করা দরকার। বিদেশ ফেরত নারী শ্রমিকদের প্রকৃত তথ্য সংগ্রহ এবং এর ধারাবাহিক পর্যালোচনা দরকার। এই গবেষণা একটি ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা মাত্র।
গবেষণায় বিদেশ ফেরত নারী শ্রমিকদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, তাদের প্রতি বিদ্যমান সামজিক মনোভাব, তাদের পারিবারিক সম্পর্ক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক পুর্নবাসনে প্রতিবন্ধকতাগুলো তুলে আনা হয়।
এ সময় বিদেশ ফেরত নারী শ্রমিকদের উন্নয়নে বিলসের গবেষণায় কিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- প্রত্যাবাসী নারী শ্রমিকদের জন্য উপযুক্ত সামজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়ন করা; উপযুক্ত দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপর জোর দেওয়া; সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের পাশাপাশি উপযুক্ত বানিজ্যিক পরামর্শ দেওয়া; মনো-সামাজিক পরামর্শ ও উপযুক্ত স্বাস্থ্য সহায়তা প্রদানসহ বেশকিছু সুপারিশ তুলে ধরা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিলস গবেষণা বিভাগের উপ-পরিচালক মনিরুল ইসলাম, নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাকিল আখতার চৌধুরী, মো. আব্দুল ওয়াহেদ, পূলক রঞ্জন ধর, বিলস পরিচালক নাজমা ইয়াসমীন, উপ-পরিচালক এম এ মজিদ প্রমুখ।
বিএসডি/আইপি