নিজস্ব প্রতিবেদক:
কার দায় সেটা না খুঁজে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক ও নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।
বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় নগরের আগ্রাবাদে নালায় তলিয়ে অকালে প্রাণ হারানো মেধাবী শিক্ষার্থী সেহেরীন মাহবুব সাদিয়ার বাসায় তার পরিবারবর্গকে সমবেদনা জানাতে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এ সময় সুজন বলেন, সাদিয়ার মতো সন্তান যেকোন পিতা-মাতার জন্য একটি স্বপ্নের বীজের মতো। কিন্তু সে স্বপ্ন ধূলিস্যাৎ হয়ে গেছে নিদারুণ গাফিলতি এবং কর্তব্য অবহেলায়। একটি রাষ্ট্রে একজন শিক্ষার্থী হাঁটতে গিয়ে নালায় পড়ে তলিয়ে যাবে যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এভাবে একের পর এক মৃত্যু হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা আমাদের ব্যথিত করে। জনগন কোনো অবস্থাতেই কার দায় সেটা দেখতে চায় না। জনগণের প্রত্যাশা নিরাপদে হাঁটাচলার স্বস্তিকর পরিবেশ।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের আগামী দিনের গুরুত্বকে অনুধাবন করেই নিজ থেকে চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন যা নিঃসন্দেহে চট্টগ্রামবাসীর জন্য সুখবর। আউটার সিটি রিং রোড, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, নদীর তলদেশে টানেল, বে-টার্মিনাল, ওয়াসার পানি সরবরাহ প্রকল্প ছাড়াও বিভিন্ন সেবা সংস্থার মাধ্যমে চট্টগ্রামে হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে। প্রকল্পগুলো পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হলে সব দিক থেকে চট্টগ্রামের গুরুত্ব অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে দেখা যাচ্ছে যে সংস্থাগুলোর অদক্ষতা এবং উদাসীনতার কারণে জনভোগান্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উন্নয়নের কারণে দেওয়ানহাট থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত চট্টগ্রামের প্রধান সড়কটি খানাখন্দে পরিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। নির্মাণকাজ করতে গিয়ে ঐ সড়কে অসংখ্য ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হলে রাস্তার দুই পাশে পানি জমে কর্দমাক্ত হয় আবার শুস্ক মৌসুমে ধুলিঝড়ে একাকার হয়ে পড়ে পুরো এলাকা। এই এলাকার মানুষের স্বস্তিকর যাতায়াত কিংবা বসবাস যেন স্বপ্নের মতো। প্রতিদিন ছোটখাটো দুর্ঘটনা যেন ঐ রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী জনগনের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। মানুষ এ অবস্থা থেকে মুক্তি চায়।
আমরা দেখতে পাচ্ছি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে বাস্তবায়নকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে জনভোগান্তি সৃষ্টি করে সরকারবিরোধী উসকানি সৃষ্টির চেষ্টা চালাচ্ছে। তাদের কার্যতালিকায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সড়কটি যান ও জনগনের চলাচল উপযোগী রাখা, নিরাপত্তাবেষ্টনী তৈরি করাসহ প্রতিনিয়ত পানি ছিটিয়ে জনদুর্ভোগ লাঘব করার কথা থাকলেও তারা কোনোটাই মানছে না। এতে করে দুর্ঘটনা বাড়ছে, হারাতে হচ্ছে অমূল্য প্রাণ। তা ছাড়া সড়কবাতি না থাকায় ঘুটঘুটে অন্ধকারে সড়ক এবং নালা মিলিত হয়ে পড়েছে। তিনি দেওয়ানহাট থেকে পতেঙ্গা পর্যন্ত সড়কের যেসব স্থানে ত্রুটি আছে সেগুলো দ্রুত চিহ্নিত করে নিরাপত্তাবেষ্টনী তৈরি না করা পর্যন্ত উন্নয়নকাজ বন্ধ রেখে ত্রুটি অপসারণ এবং নিরাপত্তাবেষ্টনী তৈরি করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছে অনুরোধ জানান।
নয়তো জানমালের আর কোনো ক্ষয়ক্ষতি হলে তার সম্পূর্ণ দায়দায়িত্ব ঐ প্রতিষ্ঠানকে বহন করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন সুজন।
এ ছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন কর্মকাণ্ড যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সেজন্য সিটি করপোরেশন, সিডিএ, পুলিশ প্রশাসন, ওয়াসাসহ সব সেবা সংস্থাকে এক টেবিলে বসে এসব সমস্যার ত্বড়িৎ সমাধান করার জন্য বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ জানান সুজন। পরে তিনি মরহুমার স্বজনদের নিয়ে কবর জিয়ারত করেন। তার রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করেন তিনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নগর আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক লায়ন মো. হোসেন, বন্দর থানা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হাজি মো. ইলিয়াছ, হালিশহর থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক রেজাউল করিম কায়সার, বখতিয়ার মিয়া, মঞ্জুর আলম, হাজি মো. আবু তাহের, আমিনুল ইসলাম আমিন, সংগঠনের সদস্যসচিব হাজি মো. হোসেন, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা নুরুল কবির, মো. জালাল মিয়া, রেজাউল করিম ইরান, সমীর মহাজন লিটন, নগর ছাত্রলীগের সভাপতি এম ইমরান আহমেদ ইমু, সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া দস্তগীর, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রনি মির্জা, ওমর ফারুক, শাহনেওয়াজ আশরাফী, ইঞ্জিনিয়ার মিঠু চৌধুরী, আব্দুর রহিম জিসান, তৌহিদুল ইসলাম, মহিউল আলম, মো. বেলাল, মো. কামরুল. ফয়সাল বাদশা, ফয়সাল ওয়াসি প্রমুখ।
বিএসডি/আইপি