নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর বেনাপোল। এই বন্দর দিয়ে প্রতিদিন আমদানি-রফতানি হয় কোটি কোটি টাকার পণ্য। আর সেই পণ্য আমদানি জটিলতা নিরসনে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে বন্দরটিতে। পণ্য পরিবহনে বেনাপোল বন্দরে যুক্ত করা হয়েছে ইনল্যান্ড ওয়ার্ল্ড লজেসটিক নামে ভারতীয় রেলের একটি পার্সেল ভ্যান।
ফলে ছোট থেকে বড় সব শ্রেণির আমদানিকারকরা এই সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। এতে খরচও কম পড়বে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
পার্সেল ভ্যানে প্রথম চালানে দুইজন আমদানিকারকের ৪৫০ মেট্রিক টন পণ্য নিয়ে রেলটি কলকাতা থেকে ছেড়ে বেনাপোল বন্দরে পৌঁছায়।
সড়ক পথে পণ্য পরিবহনে নানা সমস্যায় আমদানি বাণিজ্যে দিন দিন রেলের প্রতি ঝুঁকছেন ব্যবসায়ীরা। ইনল্যান্ড ওয়ার্ল্ড লজেসটিক ছাড়াও এ পথে আরও দুটি পার্সেল ভ্যান ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে রেলযোগে পণ্য পরিবহন করে আসছে।
এ ব্যাপারে ইনল্যান্ড ওয়ার্ল্ড লজেসটিকের ইন্দো-বাংলা ট্রেড ম্যানেজার অনুসকর জানান, বাংলাদেশে এই প্রথম তারা আমদানি পণ্য পরিবহন করছেন। তাদের রেলে এক কেজি থেকে শুরু করে সব পরিমাণের পণ্য পরিবহন করতে পারবেন। খরচও অনেক কম পড়বে। বন্দরে জায়গা সংকটের কারণে আপাতত সপ্তাহে একদিন এ রেল কলকাতা থেকে পণ্য নিয়ে বেনাপোল বন্দরে আসবে। তবে পণ্য রক্ষণাবেক্ষণের পর্যাপ্ত জায়গা বাড়ানো হলে সপ্তাহে ৭ দিনই পণ্য পরিবহন করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এ দিকে, ইনল্যান্ড ওয়ার্ল্ড লজেসটিক পার্সেল ভ্যানের বাংলাদেশ অংশের ক্লিয়ারিং এজেন্ট ও রাতুল ইন্টারন্যাশনালের মালিক আব্দুল লতিফ জানান, রেলে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে নতুন এ পার্সেল ভ্যান যুক্ত হওয়ায় প্রতিযোগিতা বাড়বে। এতে আমদানি খরচ কমবে। তবে ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন। এর ফলে দেশে আমদানি পণ্যের বাজার মূল্যও কমে আসবে।
এ বিষয়ে বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক জানান, এ পথে আমদানিকারকরা বনগাঁ কালিতলা ট্রাক পার্কিং সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছিল। কলকাতা থেকে পণ্য নিয়ে ট্রাক কালিতলা পার্কিংয়ে ১৫ দিন থেকে এক মাস পর্যন্ত সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে থাকতে হতো। এতে একদিকে অর্থ লোকসান হতো। অন্যদিকে সময়মতো পণ্য পরিবহন করতে না পরায় শিল্প-কলকারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছিল। রেলে পণ্য আমদানিতে দিনের পণ্য দিনেই কলকাতা থেকে পার্সেল ভ্যান বেনাপোল বন্দরে পৌঁছে যাচ্ছে। এতে তারা বিভিন্নভাবে উপকৃত হচ্ছেন।
বিষয়টিতে বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার আজিজুর রহমান জানান, রেলে পণ্য আমদানি হওয়ায় বাণিজ্যে গতি ফিরেছে। আমদানি বৃদ্ধিতে সরকারের রাজস্ব আয়ও বেড়েছে। পাশাপাশি দ্রুত পণ্য খালাসের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন কাস্টমস সদস্যরা।
বিএসডি/আইপি