স্টাফ রিপোর্টার
প্রতারণার মাধ্যমে ২৭ গ্রাহকের ৯ কোটি ৫৩ লাখ ৫১ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের মালিক সোনিয়া মেহজাবিনসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
রোববার ঢাকা মহানগর হাকিম মোর্শেদ আল মামুন ভূঁইয়ার আদালতে ভুক্তভোগীদের পক্ষে মো. নাসিম প্রধান বাদী হয়ে এ মামলা করেন। বাদী পক্ষের আইনজীবী সানী ওবায়েদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিন আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। শুনানি শেষে আদালত গুলশান থানাকে মামলার এজাহারটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করতে নির্দেশ দেন।
এ মামলার অপর আসামিরা হলেন- সোনিয়া মেহজাবিনের স্বামী মাসুকুর রহমান, শেখ সোহেল রানা, মো. আমান উল্লাহ চৌধুরী, জায়েদুল ফিরোজ, নাজনীন নাহার বিথী ওরফে বিথী আক্তার ও নাজমুল হাসান রাসেল।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা ই-অরেঞ্জ নামক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের মালিক ও অংশীদার, পরিচালক, চীফ অপারেটিং অফিসার। তারা লোভ দেখানো প্রলোভন প্রদানের মাধ্যমে স্বল্প মূলে বিভিন্ন পণ্য বিক্রয়ের জন্য তাদের প্রতিষ্ঠিত অনলাইন ভিত্তিক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিভিন্ন অফার প্রদান করেন এবং উক্ত পণ্যের বিপরীতে মূল্য অগ্রিম গ্রহণ করেন।
এ মামলার ভুক্তভোগীরা জানতে পারে যে, ই-অরেঞ্জ প্রতিষ্ঠানটি প্রোপ্রাইটরশীপ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে আসামি সোনিয়া মেহজাবিনের নামে ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের ট্রেড লাইসেন্স নং-১৫০৫১৮ এ লিপিবদ্ধ আছে। গত ১৯ জুলাই যার মালিকানা বদলী করে বিথী আক্তারের নামে করা হয়। আসামি মাসুকুর রহমান প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করে আসছে। আসামি শেখ সোহেল রানা চতুরতার সাথে নিজে ই-অরেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের মালিক সেজে বাংলাদেশের অন্যতম ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি অর্জনের চেষ্টা অব্যাহত রাখলেও প্রতারণার উদ্দেশ্যে মোটা অংকের অর্থ আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে আসামিরা যোগসাজশে ই-অরেঞ্জ প্রতিষ্ঠা করেন। আসামি শেখ সোহেল রানা নিয়মিত ই-অরেঞ্জ এর ব্যাংক হিসাব থেকে বিভিন্ন অংকের টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। আসামিরা পরস্পর আত্মীয়।
মামলার অভিযোগে আরো বলা হয়, দেশের সম্ভাবনাময় খাত ই-কমার্সকে কুলশিত করার উদ্দেশ্যে তারা পরস্পর যোগসাজশে গ্রাহকের অর্থ প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎ করার জন্য ই-অরেঞ্জ প্রতিষ্ঠা করে চমকপ্রদ অফার প্রদান করেন। এর মাধ্যমে এ মামলার ২৭ জন বাদীর নিকট থেকে বিভিন্ন তারিখে বিভিন্ন পণ্য ক্রয়ের জন্য সর্বমোট নয় কোটি ৫৩ লাখ ৫১ হাজার ৭৯ টাকা গ্রহণ করে রিসিট প্রদান করলেও ই-অরেঞ্জ উক্ত পেমেন্টের বিপরীতে পণ্য ডেলিভারির জন্য বিভিন্ন অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করে এবং সর্বশেষ মালিকানা হস্তান্তর হওয়ার দরুন সকল প্রকার পণ্য ডেলিভারি স্থগিত করে আসামিরা আত্মগোপন করে এবং গ্রাহকদের সরল বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে পণ্য ডেলিভারি না করে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে বিশ্বাস ভঙ্গ ও প্রতারণার মাধ্যমে উল্লেখিত অর্থ আত্মসাৎ করে ধারা-৪০৬/৪২০/১০৯/৫০৬/৩৪ দণ্ডবিধি মোতাবেক অপরাধ সংগঠিত করেছে।
বিএসডি/এমএম