আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের যে শাখা কার্যালয় বা কেন্দ্র ছিল, সেটি ধ্বংস করা হয়েছে বলে এক টুইটে জানিয়েছেন দেশটির ক্ষমতাসীন তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লা মুজাহিদ।
রোববার রাত থেকেই কাবুলে তালেবান রক্ষীরা অভিযান শুরু করেছে উল্লেখ করে টুইটবার্তায় মুজাহিদ বলেন, ‘অভিযান একদম সুনির্দিষ্ট ছিল এবং তা সফল হয়েছে। কাবুলে আইএসের কেন্দ্র সম্পূর্ণ ধ্বংস করা হচ্ছে এবং সেখানকার সব আইএস সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে।’
তবে মুজাহিদের বক্তব্য কতখানি সঠিক, তা নিয়ে সন্দেহের যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে; কারণ. আফগান সরকারের সাংস্কৃতিক কমিশনের এক কর্মকর্তা এএফপিকে জানিয়েছেন, অভিযানে মোট ৫ জন আইএসকর্মী নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ১১ জন। এর পাশপাশি, ৩ আইএস সদস্যকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এছাড়া, ১১ আহতের মধ্যে আইএসের সদস্য ছাড়াও সাধারণ বেসামরিক মানুষ ও তালেবান সদস্যরা আছেন বলেও নিশ্চিত করেছেন ওই কর্মকর্তা।
বার্তাসংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার রাতে কাবুলের উত্তরাংশে অভিযান চালিয়েছে তালেবান রক্ষীবাহিনী। উত্তর কাবুলের বেশ কয়েকজন বাসিন্দা এবং এএফপির আফগানিস্তান প্রতিনিধি নিজেও জানিয়েছেন,তারা বন্দুকের গুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন।
উত্তর কাবুলের বাসিন্দা ও আফগানিস্তানের সরকারি কর্মকর্তা আব্দুল রহমান এএফপিকে জানিয়েছেন, রোববার রাতে যে এলাকায় অভিযান চলেছে, তার বাড়িও সেই এলাকায়।
এএফপিকে তিনি বলেন, ‘প্রায় সারারাত ধরে গোলাগুলি ও বিস্ফোরণ চলেছে। আমরা কেউই ঘুমাতে পারিনি।’
গত সপ্তাহে জাবিহুল্লাহ মুজাহিদের মা মারা গেছেন। তার স্মরণে কাবুলের জাতীয় ঈদগাহ মসজিদে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছিল।
দোয়া মাহফিলের শেষে মুজাহিদ ও তার পরিবারের সদস্যদের স্বান্তনা দেওয়ার পর অতিথিরা যখন মসজিদ থেকে বের হয়ে যাচ্ছেন, তখন নির্গমণ পথের কাছে ঘটে ভয়াবহ বোমা বিস্ফোরণ, বেশ কয়েকজন হতাহত হয়েছিলেন তাতে।
আফগানিস্তানের আইএসের আঞ্চলিক শাখা আইএস খোরাসান বা আইএসকে বলে পরিচিত। এই আইএসকে প্রথম তাদের উপস্থিতি জানান দেয় গত ২৬ আগস্ট কাবুলের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভয়াবহ জোড়া বিস্ফোরণের মাধ্যমে। ওই বিস্ফোরণে মার্কিন সামরিক সদস্যসহ ১৯০ জন নিহত হয়েছিলেন।
সোমবার এএফপিকে জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ জানিয়েছেন, আফগানিস্তানে আইএস খোরাসানকে যারা সহযোগিতা করছে তাদের শনাক্ত করতে ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে সরকার।
তালেবান ও আইএস-উভয়ই কট্টরপন্থী সুন্নি ইসলামিগোষ্ঠী হলেও ধর্মীয় ব্যাখ্যা ও রণকৌশলগত দিক থেকে পার্থক্য আছে উভয়ের মধ্যে।