জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
ম্যাচ খেলার ১৫ ঘন্টা পরই বাংলাদেশ দল অনুশীলনে। স্থানীয় সময় সকাল পৌনে দশটায় টিম বাস হেনভিরু অনুশীলন গ্রাউন্ডে উপস্থিত। ভারতের সাথে অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচ খেলার পরও তেমন ক্লান্তি ভর করেনি জামালদের। সবাই শারীরিক ও মানসিকভাবে উচ্ছ্বসিত।
ঘন্টা দেড়েক অনুশীলন করালেন অস্কার। কোচ নিজেও বেশ চনমনে। খেলোয়াড়দের সাথে বন্ধুর মতো মিশে ভুল-ত্রুটি ধরিয়ে দিচ্ছেন। অনুশীলন শেষে ফরোয়ার্ড মতিন মিয়া কোচ অস্কারের মানসিক উদ্দীপনাকেই পার্থক্যের কারণ হিসেবে দেখছেন, ‘কোচ আসলে খেলোয়াড়দের আপ করে দেন অনেক। ভারত অত্যন্ত শক্তিশালী দল। কিন্তু তিনি এমনভাবে ট্রেনিং করান ও কথা বলেছেন আমাদের কাছে মনে হয়েছে ভারত কিছুই না।’
জাতীয় দলের বর্তমান স্কোয়াডে অন্যতম সিনিয়র ফুটবলার গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম রানা। তিনি জাতীয় দলে অনেক কোচের অধীনেই খেলেছেন। অস্কারের এক সপ্তাহের অনুশীলনে বাংলাদেশের এই পারফরম্যান্সের পেছনে তার ব্যাখ্যা, ‘আসলে এক সপ্তাহের অনুশীলনে তেমন বড় কিছু পরিবর্তন করা যায় না। তিনি তার কিছু ট্যাকটিক্যাল বিষয়ে কাজ করেছেন। এর চেয়েও বেশি তিনি মানসিক দিক থেকে আমাদের উদ্দীপ্ত করার চেষ্টা করেছেন।’
বাংলাদেশ দলকে মানসিক দিক থেকে উদ্দীপ্ত করার দু’টো উদহারণও দিলেন রানা, ‘যেদিন সে আমাদের দায়িত্ব নেন ওই দিন সকল খেলোয়াড়দের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ‘তোমরা ভালো খেলোয়াড়। তোমাদের র্যাংকিং কেন ১৮৯ জানি না। তোমাদের সামর্থ্য ও যোগ্যতা অনুযায়ী ১৫০-১৬০ এর মতো দল তোমরা’। ভারত বাংলাদেশের চেয়ে র্যাংকিংয়ে ৮২ ধাপ এগিয়ে। শক্তিমত্তায় অনেক অগ্রগণ্য। ভারত ম্যাচের আগে অস্কার খেলোয়াড়দের উদ্দীপ্ত করেছেন এভাবে, ‘ভারত বাংলাদেশের চেয়ে শুধু র্যাংকিংয়ে এগিয়ে। এর বেশি কিছু নয়। তোমরা চাইলেই ম্যাচটি জিততে পার।’
অস্কার অনুশীলন গ্রাউন্ড, ড্রেসিংরুমে নয় সাংবাদিক সম্মেলনেও তিনি খেলোয়াড়দের প্রশংসায় ভাসান। তিনি আত্মবিশ্বাস ও লক্ষ্যে অবিচল ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশকে বিশ্বের ও দক্ষিণ এশিয়ার সেরা দলের আখ্যা দেন। স্কিল, পারফরম্যান্স অনেক মানদন্ডে সুনীল ছেত্রী, আলী আশফাক বাংলাদেশের অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার চেয়ে এগিয়ে থাকলেও অস্কার জামালকে দক্ষিণ এশিয়ার সেরা অধিনায়কের তকমা দেন। অস্কার এভাবেই বাংলাদেশ দলকে মানসিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলার যোগ্যতা রাখে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন খেলোয়াড়দের কাছে। অস্কারের এমন মানসিক উদ্দীপনায় বাংলাদেশ সাফে কতদূর যায় সেটাই দেখার বিষয়।
এর আগে সার্বিয়ান কোচ জোরান জর্জেভিচ মাত্র দুই সপ্তাহের অনুশীলনে বাংলাদেশ দলকে এসএ গেমসে চ্যাম্পিয়ন করিয়েছিলেন। সেটাও ছিল শুধু মানসিকভাবে খেলোয়াড়দের উদ্দীপ্ত করে। অস্কারের এই মানসিক প্রেরণা এবার সাফে সাফল্য আসলে বাংলাদেশের ফুটবল আবার জেগে উঠবে।