প্রযুক্তি ডেস্ক:
করোনাভাইরাসের অদ্ভুত এক উপসর্গ হলো, কোভিড টো অর্থাৎ পায়ের আঙুলে র্যাশ বা ফুসকুড়ি। যা শৈত্যপ্রবাহ থেকে সৃষ্ট ক্ষতের মতো দেখায়। শরীর করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় এটি হয় মনে করা হয়।
কিছু করোনা রোগীর পায়ের আঙুল, এমনকি হাতের আঙুলেও ব্যতিক্রমী এ উপসর্গ কেন দেখা দেয়, তার কারণ এবার আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। গবেষকদের দাবি, এর সঙ্গে জড়িত ইমিউন সিস্টেমের অংশগুলো শণাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। নতুন এ গবেষণা বিট্রিশ জার্নাল অব ডার্মাটোলজিতে প্রকাশিত হয়েছে।
কোভিড টো কী?
এই র্যাশগুলো যেকোনো বয়সী মানুষের হতে পারে। তবে সাধারণত কম বয়সীদের মধ্যে বেশি দেখা দেয় এবং বেশ কিছু দিন স্থায়ী হয়। কারো ক্ষেত্রে কয়েক সপ্তাহ আবার কেউ কেউ কয়েক মাস পর্যন্ত এতে ভুগেন। করোনার কারণে সৃষ্ট এই ফুসকুড়ি তীব্র ব্যথা ও চুলকানির হয় এবং ফোলাভাব সহ ফোস্কার মতো দেখায়। আক্রান্ত ত্বক লাল বা বেগুণি রঙের হয়ে ওঠে। পুঁজও হতে পারে।
প্রায় ক্ষেত্রে রোগী মধ্যে করোনার অন্যান্য প্রচলিত উপসর্গ যেমন ক্রমাগত কাশি, জ্বর এবং গন্ধ বা স্বাদ পরিবর্তন-কিছুই থাকে না।
কেন হয়?
রক্ত এবং ত্বক পরীক্ষার ওপর ভিত্তি করে নতুন এই গবেষণা বলছে, ইমিউন সিস্টেমের দুটি অংশের ভূমিকা থাকতে পারে। উভয়ই করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শরীরের প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত।
একটি হলো, টাইপ ১ ইন্টারফেরন নামক অ্যান্টিভাইরাল প্রোটিন এবং অন্যটি হলো, বিশেষ ধরনের অ্যান্টিবডি, যা কেবল আক্রমণকারী ভাইরাসকেই নয় বরং ভুলক্রমে সুস্থ কোষ এবং টিস্যুকেও আক্রমণ করে থাকে। গবেষণাটি করেছেন ফ্রান্সের ইউনিভার্সিটি অব প্যারিস’র গবেষকরা। তারা আরো জানান, আক্রান্ত স্থানে রক্ত সরবরাহকারী রক্তনালীর ছোট কোষগুলোও এক্ষেত্রে জড়িত। গবেষকদের মতে, তাদের এ গবেষণা ফল রোগটিকে ভালোভাবে বুঝতে এবং সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিতে চিকিৎসকদের সহয়তা করবে।
যুক্তরাজ্যের পোডিয়াট্রিস্ট ডা. ইভান ব্রিস্টোর মতে, করোনা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার এ ফুসকুড়ি সাধারণত নিজ থেকেই সেরে যায়। কারো কারো ক্ষেত্রে মলম বা ওষুধের প্রয়োজন হয়ে থাকে। তবে এবার এ সমস্যার কারণ শণাক্ত হওয়ায় নতুন চিকিৎসা বিকাশে সহায়তা করবে।
ব্রিটিশ স্কিন ফাউন্ডেশনের মুখপাত্র এবং কনসালটেন্ট ডার্মাটোলজিস্ট ডা. ভেরোনিক বাটাইল বলেন, কোভিড টো করোনার মহামারির প্রথম দিকে খুব ঘন ঘন দেখা গিয়েছিল, কিন্তু বর্তমান ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ঢেউয়ের মধ্যে এ উপসর্গ খুব কম দেখা গেছে। এর কারণ হতে পারে অনেকে টিকা নিয়েছেন, যা এক্ষেত্রে সুরক্ষা দিয়েছে। টিকা নেওয়ার পর ‘কোভিড টো’ খুব বিরল বলে জানান তিনি।
বিএসডি/আইপি