নিজস্ব প্রতিবেদক:
চাঁপাইনবাবগঞ্জে রাতের অন্ধকারে একটি পুকুরে বিষ দিয়ে ৫০ মণ মাছ নিধন করা হয়েছে। সদর উপজেলার গোবরাতলা ইউনিয়নের চাঁপাই-মহেষপুর গ্রামের দিঘীতে শুক্রবার (০৮ অক্টোবর) রাতে বিষ দিয়ে এসব মাছ নিধন করা হয়। এতে ৫০ মণ মাছ মারা যায় এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় চার লক্ষাধিক টাকা।
শনিবার (০৯ অক্টোবর) সকালে বিপুল পরিমাণে মাছ ভাসতে দেখা যায় পুকুরে।
পুকুর মালিক, কর্মরত শ্রমিক, স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে এর আগেও একবার এই পুকুরে মাছ নিধনের জন্য তরল বিষ প্রয়োগ করা হয়েছিল। তবে সে সময় ১০ থেকে ১৫ মণ মাছ নিধন হয় বলে জানা যায়।
চাঁপাই-মহেষপুর গ্রামের মৃত আজাহার আলীর ছেলে পুকুর মালিক মজিবুর রহমান বলেন, চলতি বছরের শুরুর দিকেই পুকুর খননের সময় আমার সাথে বিভিন্ন কারণে কয়েক জনের সাথে শত্রুতা তৈরি হয়। এমনকি এখানে মাছ চাষ করতে দেওয়া হবে না এবং দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। এর আগেও একবার বিষ দিয়েছিল দুর্বৃত্তরা। সে সময় ১০-১৫ মণ মাছ মারা যায় এবং আরও অন্তত ২০-২৫ মণ মাছের ক্ষতি হয়।
তিনি আরও জানান, শুক্রবার (০৯ অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ করে পুকুর থেকে এক শ্রমিক ফোন দিয়ে বলে পুকুরে মাছ ভাসতে শুরু করেছে। খবর পেয়ে বিভিন্ন স্যালাইন ও ট্যাবলেট দিয়ে মাছের অক্সিজেন ফেরানোর কাজ শুরু করি। কিন্তু কোনভাবেই অক্সিজেনের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে আসছিল না। এমনকি পুকুরের পাড়ের উত্তর-পশ্চিম কোণে ফেলে যাওয়া তিনটি বিষের প্যাকেট পাওয়া যায়।
পুকুরে কর্মরত শ্রমিক মফিজ উদ্দিন জানান, শুক্রবার রাতে যখন থেকে বুঝতে পারলাম পুকুরে বিষ দেওয়া হয়েছে, তখন থেকে নানারকম প্রচেষ্টা চালিয়েছে। পুকুরে নতুন পানি ভর্তি করাসহ বিভিন্ন রকম চেষ্টা করেও মাছ মরা বন্ধ করতে পারিনি। রাতে কিছুটা কম হলেও সকাল থেকেই প্রচুর পরিমাণে মাছ মরছে। মরা মাছের বেশিরভাগই পোনা এবং সিলভার কাপ। এছাড়াও কাতলা, রুই মৃগেল, মিরর কার্প মাছ রয়েছে। পোনা মাছ থেকে শুরু করে দুই কেজি ওজনের মাছ পর্যন্ত মারা গেছে।
গোবরাতলা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. তাসেম আলী এ বিষয়ে জানান, ঘটনাটি শুনেছি। যে বা যারাই করুক, এটি খুবই অমানবিক ও মর্মান্তিক। বিষ দিয়ে মাছ মারার এতো বড় ঘটনা এই এলাকায় এর আগে ঘটেনি।
শনিবার (০৯ অক্টোবর) সকাল ১১টার দিকে সদর মডেল থানার একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। সদর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ওবাইদুল হক বলেন, ভুক্তভোগীর মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। এমনকি অভিযোগের সত্যতাও মিলেছে। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
বিএসডি / আইকে