শুরুটা করেছিলেন লিওনেল মেসি। এরপর রদ্রিগো ডি পল, লাওতারো মার্টিনেজদের কল্যাণে আর্জেন্টিনা পেল আরও দুই গোল। তাতে উরুগুয়েকে ৩-০ গোলে হারিয়ে এক ম্যাচ পর জয়ে ফেরাটাও হয়ে গেল কোচ লিওনেল স্ক্যালোনির শিষ্যদের।
আগের ম্যাচে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে দারুণ খেলে, আধিপত্য বিস্তার করেও জিততে পারেনি স্ক্যালোনির দল। এক ম্যাচ পরই জয়ে ফিরলেন মেসিরা। তবে স্কোরলাইন যতটা সহজ বলছে, আর্জেন্টিনার জয়টা ততটা সহজেও আসেনি। প্রথমার্ধে কম করে হলেও তিনটি নিশ্চিত গোলের হাত থেকে দলকে বাঁচিয়েছেন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ।
শুরুটা হয়েছিল ম্যাচের অষ্টম মিনিটে। লুইস সুয়ারেজের দারুণ এক বাইসাইকেল কিক রুখে দেন তিনি। এর কিছু পরে আবারও দৃশ্যপটে সেই সুয়ারেজ। দুরূহ কোণ থেকে করা তার শট কোনোক্রমে ঠেকান মার্টিনেজ, এরপর ফিরতি চেষ্টায় ফেদেরিকো ভালভার্দের জোরালো শটও রুখে দেন অ্যাস্টন ভিলা গোলরক্ষক। ফলে শুরুর ২০ মিনিটেই দুবার বড় বিপদে পড়তে পড়তেও রক্ষা পায় আর্জেন্টিনা।
নিজেদের মাঠ এস্তাদিও মন্যুমেন্তালে আর্জেন্টিনা ম্যাচে ফিরেছে এরপর। লাওতারো মার্টিনেজ সহজ সুযোগ নষ্ট করেছেন দুটো, জিওভানি লো চেলসোর শট ফিরেছে ক্রসবারে প্রতিহত হয়ে। এরপর মেসির দুটো শট রুখে দিয়েছেন উরুগুয়ে গোলরক্ষক ফার্নান্দো মুসলেরা, তাতে আর্জেন্টিনার গোলের অপেক্ষাটা বাড়ছিল ক্রমেই।
আর্জেন্টিনার সে অপেক্ষাটা শেষ হয় ম্যাচের ৩৮ মিনিটে। তাতে অনেকটা ভাগ্যের ছোঁয়াও ছিল বৈকি। বক্সের অনেকটা বাইরে থেকে উরুগুয়ে বিপদসীমায় একটা পাস লব করে বাড়িয়েছিলেন মেসি। স্ট্রাইকার লাওতারো ছুঁতে পারেননি সেটা, এরপর গোলরক্ষক মুসলেরাকেও ফাঁকি দিয়ে বলটা আছড়ে পড়ে উরুগুয়ের জালে। তাতে মেসি ছুঁয়ে ফেলেন ৮০ গোলের মাইলফলক। এমন এক কীর্তি যা নেই কোনো দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবলারের।
প্রথম গোলের অপেক্ষা শেষ হতে না হতেই বিরতির আগে আরও এক গোল পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা। ৪৪ মিনিটে বক্সের জটলা থেকে টটেনহ্যাম মিডফিল্ডার জিওভানি লো চেলসোর বাড়ানো বল থেকে গোলটি করেন রদ্রিগো ডি পল। ফলে দুই গোলের লিড নিয়ে প্রথমার্ধ শেষ করে আর্জেন্টিনা।
দ্বিতীয়ার্ধেও শুরু থেকে ছিল আর্জেন্টিনার দাপট। উরুগুয়ের ম্যাচে ফেরার আশা শেষ করে দেওয়া গোলটা এল ৬২ মিনিটে। বক্সের জটলা থেকে মেসির বাড়ানো পাসে ডান প্রান্তে ডি পল পেয়ে যান বলটা, সেখান থেকে তার নিচু ক্রস সহজেই জালে পাঠান সদ্য ইনজুরিফেরত লাওতারো। তিন গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা।
এরপরও মেসি, আনহেল ডি মারিয়ারা গোলের চেষ্টা করে গেছেন। সুয়ারেজরাও চেষ্টা করেছেন ব্যবধান ঘোচানোর। তবে কোনো চেষ্টাই সফলতার মুখ দেখেনি আর। ফলে ৩-০ গোলের সহজ এক জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আর্জেন্টিনা। ১০ ম্যাচ শেষে ছয় জয় আর চারটি ড্রয়ে দলটির সংগ্রহ ২২ পয়েন্ট। আছে কনমেবল অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের দ্বিতীয় অবস্থানে। দিনের অন্য ম্যাচে কলম্বিয়ার বিপক্ষে ড্র করা ব্রাজিল আছে তালিকার শীর্ষে। দশ ম্যাচে এক ড্র আর নয় জয় নিয়ে দলটির সংগ্রহ ২৮ পয়েন্ট। নিজেদের পরবর্তী ম্যাচে আগামী ১৫ অক্টোবর এই মন্যুমেন্তাল স্টেডিয়ামেই পেরুর বিপক্ষে খেলবে স্ক্যালোনির শিষ্যরা।