আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
আফগানিস্তানের মেয়েদের স্কুলগুলো খুলে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির শিক্ষক এবং নারী শিক্ষার্থীরা। আফগানিস্তান সংবাদমাধ্যম তোলো নিউজের বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় বার্তাসংস্থা এএনআই।
মাত্র তিন মাসের মধ্যে আফগানিস্তানের ৩৪ টি প্রদেশের ৩৩ টি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার পর গত ১৫ আগস্ট দেশটির রাজধানী কাবুল দখল করে তালেবান বাহিনী। রাজধানী দখলের পর দেশের সবগুলো মাধ্যমিক পর্যায়ের সব নারী স্কুল বন্ধ ঘোষণা করে তালেবান।
তোলো নিউজ জানিয়েছে, সম্প্রতি আফগানিস্তানের ৩ প্রদেশ- বালখ, কুন্দুজ ও সার-ই-পুলে মেয়েদের স্কুলগুলো খোলা হয়েছে, তবে এখনও বন্ধ আছে বাকি ৩১ টি প্রদেশে স্কুলসমূহ। ফলে, গত প্রায় দু’মাস ধরে মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে দেশটির মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক নারী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম।
তবে আফগানিস্তানের ৩ প্রদেশে মেয়েদের স্কুল ফের চালু হওয়ায় আশার আলো দেখছেন দেশটির রাজধানী কাবুলসহ অন্যান্য প্রদেশের মেয়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-শিক্ষিকারা। কাবুলের দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষার্থী মদিনা তোলো নিউজকে এ সম্পর্কে বলেন, ‘কয়েকটি প্রদেশে মেয়েদের স্কুল খুলে দেওয়া হয়েছে- এটি খুবই ইতিবাচক ও আশাব্যাঞ্জক একটি ব্যাপার। আমি আশা করছি, কাবুলসহ অন্যান্য প্রদেশের স্কুলগুলোও খুলে দেওয়া হবে।’
‘আমরা যতদ্রুত সম্ভব আবার স্কুলে যেতে চাই, পড়াশোনা শুরু করতে চাই। আমরা চাই, চলতি বছর শীতের আগেই স্কুলগুলো যেন খুলে দেওয়া হয়।’
আশিকুল্লাহ নামে এক স্কুলশিক্ষক এ সম্পর্কে তোলো নিউজকে বলেন, ‘নারীদের পড়াশোনা করার অধিকার আছে এবং যতদ্রুত সম্ভব আফগানিস্তানের নারীদের সে অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া উচিত। নারীরা সমাজের অর্ধেক অংশ এবং সরকারিভাবে এমন কোনো নীতি নেওয়া উচিত নয়, যাতে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’
এদিকে, সোমবার এক বার্তায় জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস জানিয়েছন, দোহায় শান্তি সংলাপের সময় নারী শিক্ষা কার্যক্রমের চালু রাখার বিষয়ে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তালেবান, কাবুল দখলের পর থেকে তার প্রায় সবই ভঙ্গ করেছে এই গোষ্ঠী।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘নারী শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়ে পূর্বের দেওয়া যাবতীয় প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে তালেবান, এতে আমি শঙ্কিত।’
‘আমি আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন সরকারের প্রতি দৃঢ়ভাবে আহ্বান জানাচ্ছি- আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের প্রতি সম্মান রেখে যেন আফগানিস্তানে মেয়েদের স্কুলগুলো যেন খুলে দেওয়া হয়।’