ডেস্ক রিপোর্ট:
মুসলিমদের পবিত্র ভূমিখ্যাত সৌদি আরবের মক্কা ও মদিনা থেকে থেকে করোনাভাইরাস মহামারিকালীন বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করা হয়েছে। দেড় বছরের বেশি সময় পর আবারও কাবা শরিফে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নামাজ পড়তে পারছেন মুসল্লিরা।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়, সামাজিক দূরত্বের নিয়ম তুলে দিয়ে রোববার থেকে পূর্ণ ধারণক্ষমতা অনুযায়ী মুসল্লিদের গ্র্যান্ড মস্কে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে। মহামারির সময় মসজিদের মেঝেজুড়ে সামাজিক দূরত্ব রক্ষায় আঁকা সব চিহ্ন মুঝে ফেলা হয়েছে এবং সে সংক্রান্ত সব নির্দেশনাও সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
তবে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সামাজিক দূরত্ব রক্ষার নিয়ম প্রত্যাহার করা হলেও কাবা শরিফে প্রবেশে মুসল্লিদের অবশ্যই টিকা নেয়া থাকতে হবে এবং মাস্ক পরতে হবে।
সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এসপিএ জানায়, পূর্বসতর্কতামূলক বিধি শিথিলের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এ পদক্ষেপ নিয়েছে রিয়াদ। ফলে মহামারিপূর্ববর্তী স্বাভাবিক সময়ের মতোই পূর্ণ ধারণক্ষমতা অনুযায়ী মুসল্লি ও দর্শনার্থীরা গ্র্যান্ড মস্কে প্রবেশ করতে পারবেন।
মক্কার স্থানীয় সময় রোববার সকাল থেকে কাবা শরিফকে ঘিরে মুসল্লিদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রার্থনা করা ছবি ও ভিডিও প্রকাশ হয়েছে সংবাদমাধ্যমে। গত বছর বৈশ্বিক মহামারি শুরুর পর প্রথমবার কাবায় এমন দৃশ্যের সাক্ষী হলো বিশ্ব।
তবে এখনও পবিত্র কাবা স্পর্শ করতে পারছেন না মুসল্লিরা। গ্র্যান্ড মস্কে মুসল্লিদের নামাজ আদায় করতে দেয়া হলেও কাবা শরিফ ঘিরে রাখা হয়েছে। কাবামুখী হয়ে প্রতিদিনের নামাজ আদায় করেন সারা বিশ্বের কোটি মুসল্লি।
সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, করোনার দৈনিক সংক্রমণ কমে আসায় এবং টিকাগ্রহীতার সংখ্যা সন্তোষজনক পর্যায়ে পৌঁছানোয় মক্কায় সামাজিক দূরত্বের বিধি প্রত্যাহার করা হয়েছে।
রেস্তোরাঁ-সিনেমা হলসহ সব ধরনের বদ্ধ বিনোদনকেন্দ্র, গণপরিবহন ও জনসমাবেশস্থলেও টিকাগ্রহীতাদের ওপর আর কোনো বিধিনিষেধ নেই সৌদি আরবে। বদ্ধ বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক হলেও উন্মুক্ত স্থানে মাস্ক পরতে হবে না জনগণকে।
এ ছাড়া স্টেডিয়ামসহ অন্য সব খেলাধুলার জায়গাগুলোতেও প্রবেশ করতে পারছেন টিকা নেয়া স্পোর্টসপ্রেমীরা।
সৌদি আরবে করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে প্রায় নয় হাজার মানুষের, সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে সাড়ে পাঁচ লাখ।
মহামারির কারণে চলতি বছরসহ টানা দুইবার ইতিহাসের সর্বনিম্ন মুসল্লি নিয়ে পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হয়েছে দেশটিতে। এ বছর জুলাইয়ে সীমিত পরিসরের হজে অংশ নিতে পেরেছে ৬০ হাজার মুসল্লি। গত বছর এ সংখ্যা ছিল মাত্র ১০ হাজার। এদের সবাই সৌদি ও সৌদি আরবে বসবাসরত অন্য দেশের নাগরিক।
মুসলিম সর্ববৃহৎ মিলনমেলা হজে স্বাভাবিক সময়ে প্রতি বছর অংশ নেয় গড়ে ২০ লাখের বেশি মুসলিম। করোনাপূর্ববর্তী ২০১৯ সালে এ সংখ্যা ছিল ২৫ লাখ।
বিএসডি / আইকে