৪৭ মিনিটে অবশেষে গোল হলো। ম্যাচ যেভাবে এগোচ্ছিল তাতে চেলসির একটি গোল পাওনা ছিল। সে গোলটা এলো নাটকীয়ভাবে। এত এত ফরোয়ার্ড আর মিডফিল্ডার থাকতে কর্নার থেকে উড়ে আসা বল এলো ডিফেন্ডার রুডিগারের কাছে। ঠিকমতো মারতেও পারেননি জার্মান ডিফেন্ডার, তাঁর উরুতে লেগে বল চলে গেল জালে।
আজ লেস্টার ও চেলসির বিপক্ষে ম্যাচের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন অবশ্য অন্য এক জার্মান, টিমো ভের্নার। দুইবার গোল করেও বাতিল হতে দেখেছেন। আবার দলকে পেনাল্টি এনে দিয়ে জয় এনে দিয়েছেন। ২-১ ব্যবধানে ঘরের মাঠে লেস্টারকে হারিয়ে আগামী মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলার পথে অনেকটাই এগিয়ে গেল তারা। শেষ ম্যাচে জিতলেই আর অন্যদের ফলের অপেক্ষায় থাকতে হবে না চেলসিকে।
এই জয়ে লেস্টারকে টপকে তিনে চলে গেছে চেলসি (৬৭ পয়েন্ট)। ৩৭ ম্যাচ থেকে ৬৬ পয়েন্ট পেয়ে আপাতত চারে আছে লেস্টার। পাঁচে থাকা লিভারপুলের পয়েন্ট ৬৩। কিন্তু ইয়ুর্গেন ক্লপের দল এক ম্যাচ কম খেলেছে, আর গোল ব্যবধানেও তারা শ্রেয়তর অবস্থানে আছে। পুরো মৌসুম চ্যাম্পিয়নস লিগ খেলার দৌড়ে এগিয়ে থাকা লেস্টারই এখন ছিটকে পড়তে পারে লড়াই থেকে।
প্রথম পাঁচ মিনিটেই দুইবার এগিয়ে যেতে পারত চেলসি। বেন চিলওয়েল ও আজপিলিকেতা একটুর জন্য দলকে এগিয়ে নিতে পারেননি। প্রাথমিক ঝড়টা ম্যাচের বাকি সময়ের সঠিক পূর্বাভাস ছিল। একের পর এক আক্রমনে লেস্টার রক্ষণ তছনছ হয়ে গেছে আজ। ১০ মিনিটের মধ্যে আরও তিনবার বক্সে ঢুকে পড়েছিল চেলসি।
বহুদিন পর দর্শকের সামনে খেলতে পেরে উজ্জীবিত চেলসি টানা আক্রমণের ফল ২১ মিনিটে পেয়ে গিয়েছিল। দারুণ এক আক্রমণের শেষে ম্যাসন মাউন্টের পাস থেকে বল পেয়ে গোল করে এগিয়ে দিয়েছিলেন টিমো ভের্নার। কিন্তু অফসাইডে বাতিল হয় সে গোল। পরের ১০ মিনিটে লেস্টার ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করেছিল কিন্তু আক্রমণের তীব্রতা চেলসিরই বেশি ছিল।
৩৪ মিনিটে আবার আলোচনায় ভের্নার। দলকে আরও একবার এগিয়ে দিয়েছেন ভেবে উল্লাস শুরু করেছিলেন, আরও একবার হতাশ হতে হলো তাঁকে। এবার অফসাইডের চেয়েও বড় নাটক হলো। প্রথমে লেস্টার গোলকিপার বল ফিরিয়ে দিয়েছেন বলে মনে হলেও রেফারি জানান বল লাইন অতিক্রম করেছে, তাই গোল। ভের্নার উদ্যাপন ঠিকভাবে করার আগেই ভিএআরের বাধা! জানা গেল, বল জার্মান ফরোয়ার্ডের হাতে লেগেছে। এরপরও চেলসি এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল কিন্তু লেস্টার গোলকিপার ক্যাসপার স্মাইকেল দলকে ম্যাচে টিকিয়ে রেখেছেন।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই রুডিগারের গোলের পরও লেস্টারের ঘুম ভাঙেনি। আক্রমণ চেলসিই করছিল। এরই ফল মিলল ৬৬ মিনিটে। প্রথমে মনে হয়েছিল ফোফানা ভের্নারকে পেনাল্টি বক্সের বাইরে ফাউয়াল করেছেন। কিন্তু আবারও ভিএআর ভূমিকা রাখল ম্যাচের ভাগ্য বদলাতে। তারা জানিয়ে দিল, ফাউলের সময় ভের্নার বক্সেই ছিলেন। পেনাল্টি থেকে ব্যবধান বাড়ালেন জর্জিনিও (২-০)।
৭৬ মিনিটে ম্যাচে ফেরার আশা জাগায় লেস্টার। সেটা চেলসির ভুলেই। রক্ষণ থেকে আক্রমণ গড়ার চেষ্টায় বক্সের একটু বাইরে বল প্রতিপক্ষে পায়ে তুলে দেয় চেলসি। বল পেয়েই বক্সের মধ্যে পাস পাঠান এনডিডি। দলকে শেষ ১৫ মিনিটে লড়ার আশা দেন ইহিয়ানাচো (২-১)।
একদম শেষ মুহূর্তে ফাঁকায় বল পেয়েও গোল করতে পারেননি পেরেজ। এরপর বেশ কিছুক্ষণ ম্যাচ বন্ধ থাকে দুই দল মারামারিতে জড়িয়ে পড়ায়। ম্যাচ একটু পর শুরু হলেও সমতা আর ফেরানো হয়নি লেস্টারের।
ওদিকে আগেই চ্যাম্পিয়নস লিগ নিশ্চিত করে ফেলা চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি ও দুইয়ে থাকা ইউয়ানিটেড আজ জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি। ব্রাইটনের মাঠে ১০ মিনিটেই ১০ জনের দলে পরিণত হওয়া সিটি এগিয়ে গিয়েও পরে ৩-২ গোলে হেরেছে। আর নিজেদের মাঠে দর্শক সমর্থন পেয়েও অবনমিত ফুলহামের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছে ইউনাইটেড।