আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
বিশ্বের ৮ দেশের টিকার ডোজ সম্পূর্ণকারী পর্যটকরা কোনও ধরনের কোয়ারেন্টাইন ছাড়াই সিঙ্গাপুরে প্রবেশ করতে পারবেন বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। করোনাভাইরাসকে সঙ্গী করে জীবন চালানোর কৌশল রপ্ত এবং বিধি-নিষেধ শিথিলের পথে হাঁটা এশিয়ার এই ব্যবসায়িক কেন্দ্র মঙ্গলবার থেকেই নতুন সিদ্ধান্ত কার্যকরের ঘোষণা দিয়েছে।
প্রাথমিকভাবে সীমান্ত বন্ধ, বিভিন্ন মাত্রার লকডাউন এবং আগ্রাসী কন্ট্যাক্ট ট্রেসিংয়ের মাধ্যমে মহামারির বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল এই নগর রাষ্ট্র। দেশের মোট জনসংখ্যার ৮০ ভাগের বেশিকে করোনাভাইরাসের পূর্ণ ডোজ দেওয়ার পর বৈশ্বিক বিমান পরিবহনের অন্যতম এই কেন্দ্র এখন অর্থনীতি পুনরুজ্জীবিত করতে চায়।
সেপ্টেম্বরেই ব্রুনাই এবং জার্মানির টিকা নেওয়া যাত্রীদের জন্য সিঙ্গাপুর ভ্রমণের পথ খুলে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার থেকে বিশ্বের আরও আট দেশ ব্রিটেন, কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডস, স্পেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটকদের জন্য সীমান্ত খুলে দিচ্ছে সিঙ্গাপুর।
এছাড়া আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার পর্যটকদের জন্যও সীমান্ত খুলে দেবে সিঙ্গাপুর। দেশটির সংশোধিত নীতিমালা অনুযায়ী, নিজ দেশ ছাড়ার আগে এবং সিঙ্গাপুরে পৌঁছানোর পর করোনাভাইরাসের পরীক্ষায় নেগেটিভ রিপোর্ট এলে এবং টিকার পূর্ণ ডোজ নেওয়া থাকলে তাদের কোয়ারেন্টাইন পালন করতে হবে না।
গত ৯ অক্টোবর সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সেইন লুং কোভিড-১৯ এর সাথে বসবাসের কৌশল ‘লিভিং উইদ কোভিড-১৯’ ঘোষণা করেন। সেদিন তিনি বলেছিলেন, লকডাউন এবং অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ থাকতে পারে না সিঙ্গাপুর।
টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে সিঙ্গাপুরের বাসিন্দাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী লি বলেন, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট দেখিয়েছে যে, করোনাভাইরাস এখনই চলে যাচ্ছে না। তবে টিকাদান, সামাজিক দূরত্ব বিধি এবং সতর্ক নজরদারির মাধ্যমে নতুন স্বাভাবিকতাকে সঙ্গী করে বেঁচে থাকা সম্ভব।
তিনি বলেন, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট অতি-সংক্রামক এবং বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। এমনকি পুরো জনগোষ্ঠীকে টিকা দেওয়া হলেও আমরা এই ভাইরাসকে নির্মূল করতে পারবো না। বিশ্বের প্রায় সব দেশই এই বাস্তবতা মেনে নিয়েছে।
এশিয়ার এই নগর রাষ্ট্রে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বহুজাতিক কোম্পানির আঞ্চলিক কার্যালয় রয়েছে; যা তাদের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সিঙ্গাপুরের ব্যবসা এবং বিমান চলাচল কেন্দ্রের তকমার ওপর নির্ভরশীল।
লি বলেছেন, আমাদের সীমান্ত অবশ্যই নিরাপদে পুনরায় খুলতে হবে। সিঙ্গাপুর থেকে কোম্পানি এবং বিনিয়োগকারীদের আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক ব্যবসা পরিচালনা করতে হয়। তাদের জন্য কাজ করা লোকজনের জীবিকা অর্জনের জন্য ভ্রমণ চালু করতে হবে।
সূত্র: এএফপি।