জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
মার্কিন ডলারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, টাকার অবমূল্যায়ন রোধ ও অনলাইনে ডলার কেনাবেচা নিয়ন্ত্রণে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। অর্থ সচিব, বাণিজ্য সচিব ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ অক্টোবর) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান এ নোটিশ পাঠান। নোটিশে বলা হয়েছে, দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে মূলত যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা ডলার ব্যবহার করা হয়। কিন্তু ইদানিং বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ডলারের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। ২০০৬ সালে এক ডলারের বিনিময় মূল্য ছিল ৭০ টাকা। অপরদিকে ২০২১ সালের অক্টোবরে ডলারের বিনিময় মূল্য ৮৫.৬০ টাকা এবং ক্ষেত্রবিশেষে ৮৮ টাকা দরে ডলার বিক্রি হচ্ছে।
অর্থনীতির ভাষ্য অনুযায়ী, সব মুদ্রার মুদ্রাস্ফীতি রয়েছে। এমনকি মার্কিন ডলারেরও মুদ্রাস্ফীতি আছে। কিন্তু দেশে মার্কিন ডলারের দাম অনৈতিক ও অন্যায়ভাবে বাড়ানো হচ্ছে এবং টাকার মান অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে। টাকার অবমূল্যায়নের ফলে বিদেশ থেকে খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য আমদানিতে অধিক পরিমাণে অর্থ খরচ হচ্ছে। আমদানিকৃত খাদ্যদ্রব্য ও জিনিসপত্রের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাচ্ছে। ফলে দেশের সাধারণ জনগণ ব্যাপক সমস্যায় জর্জরিত হয়েছে। দরিদ্র ও শ্রমজীবী মানুষ তাদের প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য কিনতে পারছে না।
নোটিশে আরও বলা হয়, মার্কিন ডলারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ও টাকার অবমূল্যায়ন রোধে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যর্থতার জন্য দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
অপরদিকে, বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ রেগুলেশন অ্যাক্ট অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লাইসেন্স ব্যতীত বৈদেশিক মুদ্রা কেনাবেচা করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু দেশে অনলাইনে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে সেওনিয়ার, স্ক্রিল, নেটেলার, গ্রেপল, ওয়েবমানি ইত্যাদি মাধ্যমে অধিক মূল্যে ডলার কেনাবেচা হচ্ছে। এসব ওয়েবসাইটে ৯০ থেকে ১০০ টাকায় ডলার বিক্রি হচ্ছে।
সুতরাং বাংলাদেশ ব্যাংককে অবিলম্বে এসব অনলাইন মানি এক্সচেঞ্জ সাইটগুলো নিয়ন্ত্রণে আনতে হবে। এসব ওয়েবসাইটে পেওনিয়ার, স্ক্রিল, নেটেলার, পেপাল, ওয়েবমানি ইত্যাদির ডলারের মূল্য বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্ধারিত মূল্যে করতে হবে। পাশাপাশি এসব অনলাইন ডলারগুলোকে বাংলাদেশের ফরেন রিজার্ভের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
লিগ্যাল নোটিশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে মার্কিন ডলারের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, টাকার অবমূল্যায়ন রোধ ও অনলাইনে ডলার কেনাবেচা নিয়ন্ত্রণের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। অন্যথায় এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়।