ক্রীড়া ডেস্ক:
ম্যাচ শেষ হওয়ার পর পরই সংবাদ সম্মেলনে আসেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। মুখে হাসি নেই। স্বভাববিরুদ্ধভাবে দুই চোয়াল শক্ত করে বসেন। টাইগার ক্যাপ্টেনের মুখের দিকে তাকালে বোঝার উপায় নেই একটু আগেই মাঠে তিনি যে দলটিকে নেতৃত্ব দিয়েছেন সে দলটি ৮৪ রানের বিশাল এক জয় পেয়েছে। তার ক্যাপ্টেন্স নক এবং সাকিবের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স এবং অন্যদের সার্বিক সহযোগিতায় প্রথম রাউন্ডের শেষ ম্যাচে পাপুয়া নিউগিনিকে উড়িয়ে দিয়ে বিশ্বকাপের পরের রাউন্ড নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ।
পাপুয়া নিউ গিনির বিপক্ষে বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় জয়ের পর সংবাদ সম্মেলন এসে বিমর্ষ মাহমুদুল্লাহর কণ্ঠ বারবার ভারী হয়ে যাচ্ছিল। অগোছালো হচ্ছিল শব্দগুলো। কথা ঠিকমতো বলতে পারছিলেন না। তবুও দলের জন্য আরো একবার নিজেকে শান্ত করে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করলেন।
মাহমুদুল্লাহ বলেছেন, ‘সমালোচনা আমাদের স্পর্শ করে। আমরাও মানুষ। আমাদের পরিবার আছে। আমাদের বাবা-মা রা’ও বসে থাকেন টিভির সামনে। আমাদের বাচ্চারাও খেলা দেখে। তারাও মন খারাপ করে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তো এখন মানুষের হাতের নাগালে। সবার মোবাইলে আছে। সমালোচনা তো হবেই। আমরাও আশা করি সমালোচনা হোক। আমরা খারাপ খেলেছি সমালোচনা হবেই। কিন্তু সমালোচনার মাধ্যমে কেউ কাউকে ছোট করে ফেলে সেটা কিন্তু খারাপ লাগে।’
‘অনেক প্রশ্ন এসেছে। আমাদের ব্যাটিংয়ের স্ট্রাইক রেট। আমাদের তিন সিনিয়র ক্রিকেটারের স্ট্রাইক রেট নিয়ে। আমরা তো চেষ্টা করেছি। চেষ্টার বাইরে তো আমাদের কাছে কিছু নেই। এরকম না যে আমরা চেষ্টা করিনি। আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। কিন্তু ফল আমাদের পক্ষে আনতে পারিনি। সমালোচনা হবেই। এটা কাম্য। কিন্তু সুস্থ সমালোচনা হলে সবার জন্য ভালো। আমরাও অনুভব করি। বাংলাদেশের জার্সিটা যখন আমরা গায়ে দেই তখন আমাদেরও সম্মান অনুভব হয়। আমরা দেশের জন্য কতটুকু করি।’
‘সবারই ত্যাগ থাকে। কারো ব্যথা থাকে। কারো অনেক ইনজুরি থাকে। ওগুলো নিয়ে আমরা খেলি। দিনের পর দিন আমরা খেলি। পেছনের গল্পগুলো অনেকেই জানে না। এজন্য কমিটমেন্ট নিয়ে প্রশ্ন করা ঠিক না। আশা করি, এখন কিছুটা স্বস্তি পাবো। সবচেয়ে বড় কথা, দলের ভেতরে যে উদ্রীবতা ছিল ওইটা নেই। এজন্য খেলোয়াড় এবং প্রত্যেক টিম ম্যানেজমেন্টকে কৃতিত্ব দেওয়া উচিত। শুধু আমরাই নই। আমাদের স্টাফ, সোহেল ভাই (ম্যাসাজম্যান), রমজান (থ্রোয়ার) প্রত্যেকের ক্রেডিট দিতে হবে। আশা করছি ভালো কিছু হবে সামনে।’
উল্লেখ্য, প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে হারের পর তাদের নিয়ে অনেক সমালোচনা হচ্ছিল। সাধারণ মানুষ, গণমাধ্যম এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) প্রধান নাজমুল হাসান কড়া সমালোচনা করেছেন ক্রিকেটারদের। হারের জন্য তিন সিনিয়রের ওপর দায় চাপান বিসিবি প্রধান। দল নির্বাচন, বোলিং, ব্যাটিং সবকিছু নিয়েই সমালোচনা করেন। এসব নিয়ে দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে ক্ষোভ জন্মেছে।
বিএসডি/আইপি