নিজস্ব প্রতিবেদক:
সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, দাতাগোষ্ঠী, বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠানসহ সবাই মিলে কাজ করলে যেকোনো দুর্যোগ যে সফলভাবে সামাল দেওয়া যায়, বৈশ্বিক করোনা মহামারি মোকাবিলায় বাংলাদেশ তার একটি দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে।
রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে বৃহস্পতিবার বিকেলে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক আয়োজিত ‘কোভিড-১৯ ইয়ার বুক ২০২০’-এর প্রকাশনা অনুষ্ঠানে বক্তারা একথা বলেন।
ব্র্যাকের ঊর্ধ্বতন পরিচালক একেএম মোর্শেদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত ‘কোভিড -১৯ ইয়ার বুক ২০২০’-এর এই প্রকাশনা অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান।
প্রধান অতিথি বলেন, ‘সামনের দিনে যদি করোনা আবারো হানা দেয় তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় তা মোকাবিলায় আমরা একইভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করব।’ দেশের টেকসই উন্নয়নের জন্য সরকার ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলো অংশিদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করে যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
‘কোভিড-১৯ ইয়ারবুক ২০২০’-এর সংক্ষিপ্তসার উপস্থাপন করেন ব্র্যাকের স্বাস্থ্য কর্মসূচির পরিচালক ডা. মোর্শেদা চৌধুরী। তিনি জানান, বিশ্বব্যাপী জনস্বাস্থ্য সংকটে জাতির জরুরি প্রয়োজনে সাড়া দিতে গিয়ে আমাদের সম্মিলিত শিক্ষা ও অভিজ্ঞতার পাশাপাশি যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছিল, তাও এই বইয়ে তুলে ধরা হয়েছে। এর ফলে ব্র্যাক ও অন্যান্য সংস্থা ভবিষ্যতেও এ ধরনের সংকট মোকাবিলায় একে রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করতে পারবে।
ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ তার সূচনা বক্তব্যে অংশীদার সংস্থাগুলোকে ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, করোনা মোকাবিলায় সরকার ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে বিদ্যমান আস্থা সত্যি আশাব্যঞ্জক। এই পার্টনারশিপ আগামীতেও যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় সৃদৃঢ়ভাবে কাজ করবে বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি।
বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল আর মিলার জানান, কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সরকার, ব্র্যাক এবং অন্যান্য অংশীদার সংস্থাগুলোর সঙ্গে মার্কিন সরকার একসাথে কাজ করতে পেরে গর্বিত।
ব্র্যাক যেভাবে করোনা মোকাবিলায় দেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে তা অনুকরণীয় বলে জানান অস্ট্রেলিয়ার হাই কমিশনার জেরেমি ব্রুর।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নাজমুল হক খান বলেন, যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টাই পারে তা থেকে উত্তরণের পথ বাতলে দিতে, ঠিক এমনটাই হয়েছে করোনা মোকাবিলায়। সামনের দিনেও একইভাবে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
কোভিড মোকাবিলায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার তাগিদের কথা জানিয়ে এনজিও ব্যুরোর পরিচালক ড. মো. আশফাকুল ইসলাম বাবলু বলেন, মহামারিতে তৃণমূল মানুষের দোরগোড়ায় প্রয়োজনীয় সেবা পৌঁছে দিতেই এই ঐক্যকে আরো জোরদার করতে হবে।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ইউনিলিভারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জাভেদ আখতার, গ্রামীণফোনের প্রধান অর্থনৈতিক কর্মকর্তা জেমস বেকার, কানাডিয়ান হাইকমিশনের সিনিয়র ডেভেলপমেন্ট অফিসার জো লন্ড্রি, এবং যুক্তরাজ্য সরকারের ফরেন কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিসের (এফসিডিও) ডেভেলপমেন্ট ডিরেক্টর জুডিথ হার্বাটসন।
অনুষ্ঠানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোভিড মোকাবিলায় এবং সংক্রমণ প্রতিরোধে সম্মুখসারির কর্মীদের প্রচেষ্টা এবং ত্যাগকে স্বীকৃতি ও সম্মান প্রদর্শন করা হয়েছে। এছাড়া মহামারি মোকাবিলায় সরকার, উন্নয়ন অংশীদার, দাতা সংস্থা এবং বেসরকারি খাতের অংশীদারসহ সকলে মিলে ঐক্যবদ্ধ শক্তি হিসেবে চলমান প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয়।
বিএসডি / আইপি