নিজস্ব প্রতিবেদক:
তিস্তা নদীতে স্মরণকালের পানি বৃদ্ধিতে রংপুর বিভাগের ৩ জেলায় ৫ কোটি টাকার ৪০৩ মেট্রিক টন পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। এছাড়া ৩৭ লাখের ওপর মাছের পোনা ভেসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষিরা এ পর্যন্ত কোনো সহায়তা পাননি। তবে মৎস্য অফিস বলছে, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে ঢাকায় পাঠানো হবে। ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষিরা সরকারি প্রণোদনায় অপেক্ষায় রয়েছেন।
ভারতের গজলডোবায় ব্যারেজের পানি ছেড়ে দেয়ায় তিস্তা ডালিয়া পয়েন্টে গত ২১ অক্টোবর পানি বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে তিস্তা নদী বেষ্টিত রংপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। হঠাৎ বন্যায় ফসল, বসতভিটার সাথে সাথে পুকুরের মাছও ভেসে যায়। মাছ ভেসে যাওয়ায় অনেক মৎস্য চাষি পুঁজি হারিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে।
রংপুর বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় মোট ৪০৩ মেট্রিক টন মাছ ভেসে গেছে। এর মধ্যে রংপুর, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামে ১ হাজার ৭৪০টি পুকুর অর্থাৎ ২২৫ হেক্টরের মাছ ভেসে গেছে। এসব মাছে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫ কোটি টাকা। সূত্র মতে, রংপুরে ৪৯০টি পুকুরের ৬০ হেক্টর জমির ১০৮ মেট্রিক টন, কুড়িগ্রামের ৩০০ পুকুরে ৪৫ হেক্টরে ৬৫ মেট্রিকটন ও লালমনিরহাটে ৯৫০টি পুকুরের ১২০ হেক্টরের ২৩০ মেট্রিক টন মাছ ভেসে গেছে। এছাড়া ৩৭ লাখের বেশি মাছের পোনা ভেসে গেছে।
গঙ্গাচড়া উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন রাজু বলেন, তিনি দুইটি হ্যাচারির সাথে যুক্ত রয়েছেন। তার দুটি হ্যাচারির মাছ ও পোনা বন্যার পানিতে ভেসে গেছে। ওই এলাকার মৎস্য চাষি ওমর আলী বলেন, তার পুকুরের মাছ বন্যার পানিতে ভেসে যাওয়ায় তিনি সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছেন। পুনরায় মাছ চাষ করতে হলে তাকে ঋণ নিয়ে করতে হবে। তিনি ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষিদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে সরকারি সহায়তা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
রংপুর বিভাগীয় মৎস্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, তিস্তার হঠাৎ বন্যায় রংপুর, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটে ৪ কোটি ৯০ লাখ টাকার মাছের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য চাষিদের তালিকা প্রণয়ন করে ঢাকা পাঠানো হচ্ছে।
বিএসডি /আইপি