নিজস্ব প্রতিনিধি:
কুমিল্লায় পূজা মণ্ডপে কোরআন রাখায় সন্দেহভাজন ইকবাল হোসেনকে মানসিক ভারসাম্যহীন দাবি করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তার অভিযোগ, ইকবালকে দিয়ে মণ্ডপে কোরআন রেখে সরকারই পরিকল্পিতভাবে দেশে হিন্দুদের ওপর আক্রমণ করিয়েছে।
রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এই গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লার ওই ঘটনার পর কুমিল্লা ছাড়াও চাঁদপুর, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, রংপুরসহ বেশি কিছু জেলায় মণ্ডপ, মন্দিরের পাশাপাশি হিন্দু পল্লিতেও হামলা হয়।
পরে এই ঘটনায় যে সিসিটিভি ক্যামেরার ভিডিও প্রকাশ হলে ইকবালের সম্পৃক্ততার বিষয়টি স্পষ্ট হয়। গত ২১ অক্টোবর তিনি গ্রেপ্তারও হন।
ফখরুল মনে করেন, ইকবালকে দিয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছে সরকার। তিনি বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে একজন পাগলকে দিয়ে মসজিদে কোরআন রাখা হলো। মুসলমানরা আন্দোলনে নামল। আবার হাজীগঞ্জে হামলা করা হলো। এগুলো সব একই সূত্রে গাঁথা।
‘এই যে তারা (সরকার) পরিকল্পিত ঘটনা ঘটাচ্ছে। এটা তাদের একটা অস্ত্র। এই অস্ত্রকে বিএনপির বিরুদ্ধে ব্যবহার করে তারা আবার ক্ষমতায় আসতে চায়।
‘বর্তমান সরকার আবারও ক্ষমতায় আসার জন্য দেশে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনা ঘটাচ্ছে। তাদের উদ্দেশ্য, এর দায় বিএনপির ওপর চাপিয়ে আবারও ক্ষমতায় আসা।’
রংপুরে হিন্দুপল্লিতে হামলার সময় ছাত্রলীগের দুজন নেতা উপস্থিত ছিলেন দাবি করে ফখরুল বলেন, ‘অতএব এসব ঘটনা কে ঘটাচ্ছে এ নিয়ে কোনো সন্দেহ করা কিংবা ভাবার অবকাশ নেই। কারণ এটা ঘটিয়েছে সরকার নিজেই।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটানোর পর আবার পার্শ্ববর্তী দেশ ত্রিপুরায় মসজিদে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটিয়ে তারা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগাতে চায়।
‘যারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করছে, তারা এসব ঘটনা ঘটিয়ে এক দলকে ক্ষমতায় রাখতে চায়।’
আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘‘এই হামলা কোনো সাম্প্রদায়িক নয়। এটা রাজনৈতিক হামলা। সাম্প্রদায়িক বলে এটাকে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
‘সরকার বলে, তারা তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। আসলে এই তদন্তের কিছুই হবে না। কোনো বিচারও হবে না। যে ওসি কোরআন পেলেন, তাকে কেন জিজ্ঞাসাবাদ করা হলো না?’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সবকিছু বাদ দিয়ে এক দিকে মনোনিবেশ করা উচিত। সেটা হলো শেখ হাসিনার পতন। কারণ, বর্তমান সরকারের পতন না হলে কোনো সমস্যারই সমাধান হবে না। আমাদের হাতে আর সময় নেই।’
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠন ‘নারী ও শিশু অধিকার ফোরাম’ এর আহ্বায়ক বেগম সেলিমা রহমান। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারাসহ দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বিএসডি / আইকে