চলমান লকডাউন আরও এক সপ্তাহ অর্থাৎ ৩১ মে মধ্যরাত পর্যন্ত বাড়ছে। লকডাউন বাড়ানোর সুপারিশ করে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য সারসংক্ষেপ পাঠিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। দেশে কোভিডের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের (ধরন) অস্তিত্ব মেলায় এখনই লকডাউন তুলতে চায় না সরকার। এ ছাড়া শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যাও এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। প্রধানমন্ত্রী লকডাউন বাড়ানোর সারসংক্ষেপে সম্মতি দিলেই আজ রোববার প্রজ্ঞাপন জারি হবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
লকডাউন বাড়ানো প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব (মাঠ প্রশাসন সমন্বয় অধিশাখা) মো. রেজাউল ইসলাম গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় বলেন, আমরা লকডাউন বিষয়ে একটি নথি প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের জন্য পাঠিয়েছি। তিনি অনুমোদন দিলেই জানাতে পারব। এর বেশি এখন কিছুই বলতে পারব না। চলমান লকডাউনের আদলেই কি আরও এক সপ্তাহ বাড়বে এমন প্রশ্নে এই কর্মকর্তা বলেন, হ্যাঁ। আমরা সেভাবেই প্রস্তাব পাঠিয়েছি।
কর্মকর্তারা বলেন, সাধারণত জরুরি কোনো বিষয় হলে প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়েই সারসংক্ষেপ তৈরি হয়। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে লকডাউন বাড়ছেই। এ ছাড়া করোনা ইস্যুতে কোনো সারসংক্ষেপই প্রধানমন্ত্রী ফেরত পাঠাননি। ফলে এটি নিশ্চিত, লকডাউন আরও এক সপ্তাহ বাড়ছে।
তারা আরও বলেন, কয়েক দিন ধরে করোনা আক্রান্ত মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। এ নিয়ে সরকারের মধ্যে দুশ্চিন্তা আছে। ফলে বর্তমানে যেভাবে লকডাউন বা বিধিনিষেধ চলছে, ঠিক সেভাবেই লকডাউন বাড়ানো হচ্ছে। ফলে আন্তঃজেলা বাস, ট্রেন ও লঞ্চ আগের মতো বন্ধ থাকবে। তবে জেলার মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি রক্ষা করে গণপরিবহন চালু থাকবে। এ ছাড়া মার্কেট-শপিংমলসহ দোকানপাট সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে। উৎপাদনমুখী শিল্পকারখানাও চালু থাকবে। স্বাস্থ্যবিধি মানানোর বিষয়ে সরকার আরেকটু তৎপর হবে।
বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, লকডাউন এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলছে। দেশের অর্থনীতি মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে। খেটে খাওয়া মানুষ বেশি দুর্ভোগে পড়েছে। এ জন্য সরকার চাইছে স্বাস্থ্যবিধির কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করে লকডাউন তুলে দিতে। কিন্তু সম্প্রতি দেশে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের অস্তিত্ব মিলেছে।
ফলে সরকারের মধ্যে দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে। এ জন্য লকডাউন বা বিধিনিষেধ বাড়িয়ে পরিস্থিতি আরও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করতে চায় সরকার।
এদিকে গত ১৮ মে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভায় লকডাউন বাড়ানোর বিষয়ে সুপারিশ করা হয়নি। কমিটি প্রত্যেককে মাস্ক পরে স্বাস্থ্যবিধি মানার পরামর্শ দিয়েছে। মাস্ক নিশ্চিতের ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সক্রিয় থাকার পরামর্শও দিয়েছে তারা।
লকডাউন নিয়ে কথা বলার জন্য জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকে ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। করোনা ভাইরাসের বিস্তাররোধে গত ৫ এপ্রিল লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। পরে ১৪ এপ্রিল ভোর ৬টা থেকে আট দিনের কঠোর বিধিনিষেধ বা লকডাউনে যায় দেশ। দফায় দফায় লকডাউন বাড়ানো হয়।