নিজস্ব প্রতিবেদক:
পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়েছে সম্মিলিত সনাতন পরিষদ। পাশাপাশি ২০০১ সাল থেকে এ পর্যন্ত দেশব্যাপী সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার মূলহোতাদের চিহ্নিতপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিসহ আরও কয়েকটি দাবি রয়েছে সংগঠনটির।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান সম্মিলিত সনাতন পরিষদের যুগ্ম সচিব এম কে রায়।
সংগঠনটির অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে, সাহাবুদ্দিন কমিশনের সুপারিশমালা বাস্তবায়ন ও সাম্প্রদায়িক হামলায় ধ্বংসপ্রাপ্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত মঠ-মন্দির, দেবালয় ও বাড়িঘর পুনঃনির্মাণ এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোর উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান; সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন এবং অবিলম্বে তা বলবৎ করে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠনের মাধ্যমে দ্রুত বিচার নিশ্চিতকরণ; সংখ্যালঘু কমিশন গঠন ও সংখ্যালঘুবিষয়ক মন্ত্রণালয় গঠন করা এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় আটককৃতদেরকে অবিলম্বে মুক্তি প্রদান করা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এম কে রায় বলেন, সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী যখন মাঠ পর্যায়ে পুলিশ প্রশাসন প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার করছে, মূলহোতাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা করছে, ঠিক তখনই পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি সহিংসতাকারী ও অপরাধীদের উৎসাহিত করেছে। যেখানে সারাবিশ্বে অসাম্প্রদায়িক ও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন প্রতিটি জাতি-গোষ্ঠির লোক এ ঘটনার নিন্দা করছে, সেখানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী তা স্বীকার না করে বরং মিথ্যাচার করলেন, যা আপনারা সব জানেন। একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির কাছ থেকে নির্যাতিত, নিপীড়িত সহিংসতার শিকার সনাতনী জাতি-গোষ্ঠী এ রকম কাণ্ডজ্ঞানহীন বক্তব্য প্রত্যাশা করেনি।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী অত্যন্ত সুস্থ মস্তিষ্কে উদ্দেশ্যপ্রণোতিভাবে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার শিকার ব্যক্তি ও জীবন উৎসর্গকারী ব্যক্তিদের আত্মার সঙ্গে এবং সনাতনী জাতি-গোষ্ঠীর সাথে চরম ধৃষ্টতাপূর্ণ তামাশা করেছেন। আমরা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর মিথ্যা বক্তব্যের জন্য তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছি এবং তার পদত্যাগ দাবি করছি।
লিখিত বক্তব্য আরও বলা হয়, স্বাধীনতা যুদ্ধে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছে। অথচ স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি ক্ষমতায় থাকাকালীন প্রায়ই দেশের কোথাও না কোথাও, কোনো না কোনোভাবে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন নির্মম নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। আজ পর্যন্ত তারা কোনো বিচার বা উপযুক্ত কোনো প্রতিকার পাননি।
সংবাদ সম্মেলন আরও উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত সনাতন পরিষদের আহবায়ক অধ্যাপক হীরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, সদস্য সচিব শ্রী প্রদীপ কুমার আচার্য প্রমুখ।