আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সিরিয়ায় ২০১৯ সালে চালানো মার্কিন সামরিক বাহিনীর বিমান হামলায় ৬৪ জন নারী ও শিশু নিহত হয়েছিলেন। এটি একটি সম্ভাব্য যুদ্ধাপরাধ এবং যুক্তরাষ্ট্র সেসময় এই হামলার তথ্য গোপন করেছিল। জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সময় এই হামলার ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সময় শনিবার (১৩ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস এই তথ্য সামনে এনেছে বলে রোববার জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
পত্রিকাটি বলছে, সিরিয়ায় মার্কিন বিমান অভিযানগুলো তদারকি করে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড। ২০১৯ সালে দেশটিতে চালানো এই প্রাণঘাতী বিমান হামলার কথা চলতি সপ্তাহে প্রথমবারের মতো স্বীকার করে তারা। তাদের দাবি, হামলার পেছনে ন্যায়সঙ্গত যুক্তি ছিল।
শনিবার এক বিবৃতিতে মার্কিন সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড জানিয়েছে, সিরিয়ায় ২০১৯ সালে চালানো ওই বিমান হামলায় ৮০ জন নিহত হয়েছিলেন। এর মধ্যে ১৬ জন জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের যোদ্ধা এবং চারজন বেসামরিক নাগরিক।
তাদের দাবি, বিমান হামলায় নিহত বাকি ৬০ জন বেসামরিক নাগরিক ছিলেন কি না, তারা সেটি নিশ্চিত নয়। কারণ, নারী ও শিশুরাও হয়তো (আইএসের) যোদ্ধা হতে পারেন।
অবশ্য এই ৬০ জনের মধ্যে ঠিক কতজন বেসামরিক নাগরিক তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কারণ হামলার পর ধারণ করা ভিডিওতে বেশ কয়েকজন অস্ত্রধারী নারীকে এবং কমপক্ষে একজন সশস্ত্র শিশুকে দেখা যায়। মার্কিন সামরিক বাহিনীর দাবি, নিহত ওই ৬০ জনের বেশিরভাগই হয়তো যোদ্ধা হতে পারেন।
সামরিক বাহিনী আরও জানিয়েছে, সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেস (এসডিএফ)-এর যোদ্ধারা ওই এলাকায় তীব্র হামলার সম্মুখীন হওয়ার পর মার্কিন সামরিক বাহিনী সেখানে হামলা চালিয়েছিল। কারণ মার্কিন হামলা ছাড়া এসডিএফ সেখান থেকে পলায়নের ঝুঁকিতে ছিল এবং হামলাস্থলে কোনো বেসামরিক মানুষ ছিল না বলেও নিশ্চিত করেছিল এসডিএফ।
২০১১ সালে সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদবিরোধী এক বিক্ষোভের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী ব্যবস্থার নেওয়ার মধ্য দিয়ে দেশটিতে যে সংঘাতের সূচনা হয়; সেটিই পরে গৃহযুদ্ধে রূপ নেয়, যা এখনও চলছে। এক দশকের এই সংঘাতে কমপক্ষে তিন লাখ ৮০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং দেশটির অর্ধেক জনগোষ্ঠীই বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে গেছে। বিভিন্ন দেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছে সিরিয়ার অন্তত ৬০ লাখ মানুষ।