ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে টানা বর্ষণ ও জোয়ারে বাগেরহাট জেলার দুই হাজার মৎস্য ঘের ভেসে গেছে। বুধবার (২৬ মে) সকাল থেকে জোয়ারের পানি বাড়তে থাকায় ঘেরের পাড় ভেঙে এবং বাঁধ উপচে পানি ঢুকতে থাকে। ফলে চাষিদের কয়েক কোটি টাকার মাছ পানিতে ভেসে গেছে।
বাগেরহাট জেলা মৎস্য বিভাগের তথ্য মতে, বাগেরহাট জেলার রামপাল, মোংলা, শরণখোলা এবং মোড়েলগঞ্জ উপজেলার ২ হাজার ৯১টি মৎস্য ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে চাষিদের ১ কোটি ৫১ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে ঘেরের সংখ্যা ও ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি বলে দাবি করেছেন জেলা চিংড়ি চাষি সমিতির সভাপতি ফকির মহিতুল ইসলাম সুমন।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াস ও জোয়ারের প্রভাবে এখন পর্যন্ত জেলার দুই থেকে আড়াই হাজার মৎস্য ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে চাষিদের অন্তত চার থেকে পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। রামপাল, মোংলায় অনেক বড় বড় ঘের ভেসে গেছে। ওয়াপদার বাইরে থাকা ঘেরগুলোর বেশি ক্ষতি হয়েছে।
মোংলা উপজেলার চিংড়ি চাষি মিলন কাজি বলেন, রাতের বৃষ্টিতে ঘেরের পাড় দুর্বল হয়ে যায়। সকালের জোয়ার এবং ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে আমার ঘের পাড়ের কয়েক জায়গা ভেঙে পানি প্রবেশ করে। এতে আমার কয়েক লাখ টাকার বাগদা চিংড়ি বের হয়ে গেছে।
মোরেলগঞ্জ উপজেলার তেলিগাতী গ্রামের মাহতাব হাওলাদার বলেন, রাতেই একটি ঘেরের পাড় ভেঙে যায় আমার। সকালের জোয়ারে আরও একটি ঘেরের পাড় উপচে পানি প্রবেশ করে ভেতরে। মাছও বের হয়ে যায়। ঘেরের অবস্থা এমন যে একবার পানি যাওয়া-আসা করলেই মাছ বের হয়ে যায়। শুধু আমার নয়, এলাকার অনেকেরই এভাবে ঘেরের মাছ বেরিয়ে গেছে।
শরণখোলা উপজেলার ঘের চাষি আজিজুল হল জানান, একদিকে বৃষ্টি তারপর আবার জোয়ারের পানি। কতক্ষণ আর ঠিক থাকবে। আমার ঘের তলিয়ে সব শেষ হয়ে গেছে। সামনের দিনগুলো কিভাবে চলব মাথায় আসছে না।
বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম রাসেল বলেন, মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী জেলার চার উপজেলা রামপাল, মোংলা, শরণখোলা এবং মোড়েলগঞ্জের অন্তত ২ হাজার ৯১টি মৎস্য ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে চাষিদের ১ কোটি ৫১ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। উপজেলাভিত্তিক ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের তালিকা তৈরি শুরু হয়েছে। এসব চাষিদের সহায়তা দেওয়ার জন্য মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হবে।