আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
ইরাক থেকে যাওয়া শরণার্থীদের বেআইনিভাবে ঢোকার ব্যবস্থা করে দেওয়া নিয়ে পোল্যান্ড সীমান্তে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য বেলারুশের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপে সম্মত হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। শরণার্থী ইস্যুতে গত সপ্তাহের প্রথম থেকে পোলিশ-বেলারুশ সীমান্ত উত্তাল হয়ে ওঠে।
এরপর থেকেই তীব্র শীত ও ঠান্ডা আবহাওয়ার মধ্যে ওই দুই দেশের সীমান্ত এলাকায় অবস্থান করছেন হাজার হাজার শরণার্থী। আটকে পড়া এসব শরণার্থীদের বেশিরভাগই ইরাক থেকে যাওয়া। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে শরণার্থীদের ফেরত নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইরাক। মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা ও ডয়চে ভেলে।
সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, পোল্যান্ড-বেলারুশ সীমান্তের অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে কড়া নজর রাখছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এই ইস্যুতে সোমবার ব্রাসেলসে ইউরোপের একাধিক পররাষ্ট্রমন্ত্রী বৈঠকে বসেছিলেন। সেখানে বেলারুশের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা জারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ইইউয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, শরণার্থী সংকট সৃষ্টির কারণে বেলারুশকে কঠিন শাস্তির মুখে পড়তে হবে। তবে কোন কোন খাতে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
এদিকে পোল্যান্ড-বেলারুশ সীমান্তে কার্যত প্রাণের সঙ্গে লড়াই করছেন হাজার হাজার শরণার্থী। প্রবল ঠান্ডার মধ্যে কোনোরকমে অস্থায়ী আশ্রয় তৈরি করে সেখানে অবস্থান করছেন তারা। সীমান্তের ওই এলাকায় নেই খাবার, এমনকি প্রয়োজনীয় পানিরও সংকট রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে শরণার্থীদের ফেরত নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইরাক। মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, সীমান্ত এলাকায় আটকে থাকা যেসব শরণার্থী দেশে ফিরে যেতে ইচ্ছুক, ইরাকের প্রশসান তাদের ফিরিয়ে নিতে সাহায্য করবে।
মূলত বেলারুশ সীমান্ত দিয়ে পোল্যান্ডে ঢোকার চেষ্টা করা শরণার্থীদের অধিকাংশই ইরাকের নাগরিক। তাদের মধ্যে একটি বড় অংশ আবার জাতিগতভাবে কুর্দি। ইরাকি ছাড়াও সিরিয়া ও আফগানিস্তানের মানুষও সেখানে আছেন।
ইরাক বলছে, সীমান্তে আটকে থাকা সব শরণার্থী অবশ্য ফিরে যেতে চান না। যারা ইচ্ছুক, তাদেরই ফেরানোর ব্যবস্থা করা হবে। এ লক্ষ্যে দ্রুত বেলারুশে বিমান পাঠিয়ে শরণার্থীদের ফেরানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে দেশটি।
এদিকে বেলারুশের জাতীয় বিমান সংস্থা জানিয়েছে, দুবাই থেকে মিনস্কগামী বিমানে ইরাক, সিরিয়া এবং ইয়েমেনের নাগরিকদের উঠতে দেওয়া হবে না। পরে সেই তালিকায় আফগানদের নামও যুক্ত করা হয়।
ইরাকের জাতীয় বিমান সংস্থাও জানিয়ে দিয়েছে, আপাতত বাগদাদ থেকে মিনস্কে কোনো বিমান যাবে না। তবে মিনস্ক থেকে বাগদাদে বিমান আসবে। সেখানে শরণার্থীরা চাইলে উঠে পড়তে পারেন। বিমানের শিডিউলও ঘোষণা করা হয়েছে।
তবে তীব্র শীত ও ঠান্ডা আবহাওয়ার মধ্যে ওই দুই দেশের সীমান্ত এলাকায় অবস্থান করা হাজার হাজার শরণার্থী এখনও দেশে ফিরতে চান না বলেই জানা যাচ্ছে।