জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক:
বাংলাদেশ ইসলামীক ইউনাইটেড পার্টির চেয়ারম্যান মাওলান ইসমাইল হোসাইন এক বিবৃতে বলেন নবীদের সম্পর্কে ভ্রান্ত আকিদা এবং ইসলামের ত্রুটিযুক্ত ব্যাখ্যার কারণেই বরাবরের মত কওমি ওলামায়ে কেরাম মওদুদীবাদ এ বিশ্বাসী জামাত ইসলামের বিরোধিতা করেছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মিশর, ইরান, তুরস্ক ও পাকিস্তানের জামাত ইসলামের দসরদের হতে বিপুল পরিমাণ আর্থিক সহায়তা যখনই বাংলাদেশের কওমি ওলামায়ে কেরামের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল, তখনই জামাত ইসলামের নেতারা তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে অর্থ আত্মসাৎ এবং নিজের কর্তৃত্বে আনার চেষ্টা করেছে।
এছাড়াও আমাদের দেশের কওমি ওলামায়ে কেরাম সবসময়ই জামাত ইসলাম এবং মওদুদী মতবাদ এর এই ভ্রান্ত আকিদা বিশ্বাস দের বিরুদ্ধাচারণ করে এসেছে। জামাত ইসলাম নেতাদের কাছে কখনোই নিজেদের আত্মসম্মান বিলিন করে আসেনি। নিছক কিছু আর্থিক সহায়তার আশায় যদিও বারংবার জামাত সরকারের চক্রান্তকারী সংসদ সদস্য ও মন্ত্রিপরিষদের সদস্যদের সবসময়ই উদ্দেশ্য ছিল কওমি মাদ্রাসার এই বিরাট জনগোষ্ঠীকে কিছু অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে নিজেদের আওতাধীন করে রাখা তবে প্রচ- রকমে আত্মসম্মানবোধ এবং আল্লাহ তালার উপর তাওয়াক্কুল এর কারনে কখনোই কমই পন্থী ওলামায়ে কেরামগণ এ সকল চক্রান্তের ফাঁদে পা দেয়নি। গতকাল বর্তমান সময়েরর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে একথা বলেন তিনি।
মাওলানা ইসমাইন হোসাইন আরো বলেন, এবার কিছু ইতিহাসের পাতা উলটে দেখা যাক কিভাবে জামাত ইসলামের নেতারা কওমি ওলামায়ে কেরাম দের কিনে নিতে চেয়েছিল কেবলমাত্র অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে এবং অতঃপর ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন,হযরত মাওলানা ফজলুল হক আমিনী রহ. হাফেজ্জী হুজুর রহ.-এর হাতধরেই রাজনীতিতে আসেন। কিন্তু তখনো তত লাইম লাইটে ছিলেন না তিনি। কিন্তু ১৯৯৩ সালে ভারতে উগ্রবাদী হিন্দু কর্তৃক বাবরী মসজিদ শহীদ হলে বাবরী মসজিদ পুনঃ নির্মাণের দাবিতে শায়খুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক রহ.-এর নেতৃত্বে লংমার্চ ঘোষণা করা হয়। লংমার্চের সদস্যসচিব ছিলেন মুফতি ফজলুল হক আমিনী রহ.। এরপরই তিনি চলে এলেন আলেম সমাজের সর্বোচ্চ নেতার কাতারে। লংমার্চ হলো। বেনাপোল যাওয়ার পথে তৎকালীন সরকারের এক মন্ত্রীর নির্দেশে লংমার্চে গুলি করা হল। ৫ জন যুবক শহীদ হলেন। গুলির মুখে লংমার্চ ফেরৎ আসল। যাওয়া হলো না ভারতের অযোধ্যায়। বাস্তবতা হল- ভারতের উগ্রবাদী হিন্দু কর্তৃক শহীদ বাবরী মসজিদ নির্মাণে বাংলাদেশ থেকে লংমার্চ করে যাওয়ার কর্মসূচি রাজনৈতিক এবং ভৌগলিক বোদ্দাদের কাছে অলীক স্বপ্ন মাত্র। এটা আবেগ নির্ভর বাস্তবতা বিরোধী কর্মসূচী।
লংমার্চ থেকে ফিরে আসার কিছুদিনের মধ্যে শায়খুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক রহ. এবং মুফতি ফজলুল হক আমিনী রহ. এর মাঝে সম্পর্কের অবনতি হল। শোনা গিয়েছিল, এ সম্পর্কের অবনতির কারণও নাকি জামায়াতে ইসলামী প্রভাবিত তৎকালীন সরকারের কর্তৃক দেয়া হাদিয়ার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে। ফলশ্রুতিতে জামিয়া রহমানিয়ায় নাটক করে মুফতি ফজলুল হক আমিনী রহ.কে ‘মিরজাফর’ উপাধি দেয়া হয়েছিল।
এভাবে চলতেছিল আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। নির্বাচনে এলো ১৯৯৬ এ। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এল। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে কওমী ঘরানার সব রাজনৈতিক দলগুলো এক প্লাটফর্মে আসার জন্য প্রতিষ্ঠা হল ইসলামী ঐক্যজোট। ঐক্যজোটের প্রতষ্ঠিাতা সভাপতি হলেন শাইখুল হাদীস আজিজুল হক রহ. এবং সদস্য সচিব হলেন মুফতী মোহাম্মদ ওয়াকাসস। কিছুদিন পরই শাইখুল হাদীস আজিজুল হক রহ.কে বহিষ্কার করে পীর মাওলানা ফজলুল করীম সাহেবকে সভাপতি বানানো হল। অল্প দিন পরেই আবার আমীরের পদ ফিরে পেলেন শাইখুল হাদীস আজিজুল হক রহ.। পরবর্তীতে সদস্য সচিব হলেন মুফতি ফজলুল হক আমিনী রহ.। তারা আওয়ামীবিরোধী এবং ধর্মীয় অনেক ইস্যু নিয়ে আন্দোলন করে জেল জুলুমের শিকার হলেন। ২০০১ এ নির্বাচন এল। ইসলামী ঐক্যজোট বিএনপি-জামায়াত জোটের সাথে মিলে নির্বাচনে গেল। সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করল চার দলীয় ঐক্যজোট। আগের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ইসলামী ঐক্যজোট মন্ত্রিত্ব পাবে। এখানে এক কৌশলী চাল চাললো জামায়াতে ইসলামী। কেননা, কওমী ঘরানার কেউ মন্ত্রিত্ব পেলে সরকারি-বেসরকারি সকল সেক্টরে সংগঠন মজবুত করবে। ইসলামী খেলাফতের গ্রহণযোগ্যতা মানুষের সামনে তুলে ধরবে।
যদি মন্ত্রিত্বের অংশীদারিত্বের সুবিধাগ্রহণ করে স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সব ক্ষেত্রে জামায়াতের ভ্রান্ত মতবাদের মুখোশ উন্মচন করে দেয়, তাহলে জামায়াত যে ভাবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সকল সেক্টরে ওদের সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছে তা আর সম্ভব হবে না। ভাটা পড়বে তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রমে, ইসলামের মূলদর্শন সাধারণ মানুষ পেয়ে গেলে জামায়াতে ইসলামীর উগ্রবাদী দর্শন আর কেউ গিলবে না। এই নকশা বাস্তবায়ন করার জন্য একজন কওমী ঘরানার প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন যিনি জামায়াতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে মাসে প্রায় দুই লাখ টাকা সম্মানী পেতেন। আর একজন আলিয়া মাদরাসায় পড়াশুনা করলেও কওমী ওয়ালাদের সাথে তার সার্বক্ষণিক চলাফেরা ছিল। এই দুইজনের মাধ্যমে উদ্দেশ্য সাধন করল। আমিনী সাহেবকে বোঝান হল, জেল খেটেছেন আপনি। জুলুম অত্যাচার সহ্য করেছেন আপনি। মন্ত্রিত্ব পাওয়ার মূল দাবিদার আপনি। কিন্তু বাধা হল আপনি ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব। পার্টির চেয়ারম্যান হলে আপনি মন্ত্রিত্ব পাবেন। কওমি ঘরানার আলেম ওলামাদের ভবিষ্যতের পরিণামের কথা না ভেবে আমিনী সাহেব তার বুখারীর শায়েখ হযরত আজিজুল হক রহ.কে কোন মিটিং ছাড়াই বহিষ্কার করে এক রাতেই নিজেকে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান ঘোষণা করলেন। বিরোধ হল শায়খুল হাদীস ও আমিনী সাহেবের মধ্যে। শালিস মানা হলো ঐ প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন যিনি জামায়াতের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে মাসে প্রায় দুই লাখ টাকা সম্মানী পেতেন। আরেকজন আলিয়া মাদরাসার শিক্ষিত কিন্তু সখ্যতা দেওবন্দীদের সাথে। তারা রায় ঘোষণা করলেন, আমিনীই বৈধ চেয়ারম্যান। তাই আমিনী সাহেবও গেলেন মন্ত্রিত্বের জন্য। শাইখুল হাদীস সাহেবও গেলেন। বিএনপি থেকে বলা হল আপনাদের কাকে মন্ত্রিত্ব দেব। আগে এক হয়ে আসেন। তারপর মন্ত্রিত্ব। একও হতে পারলো না। মন্ত্রিত্বও পেল না। সফল হল জামায়াতে ইসলামীর মিশন। এরপর নেজামে ইসলামও তিন ভাগে বিভক্ত হল। সবাই নাম দিল ইসলামী ঐক্যজোট।
এরপর শাইখুল হাদীসের নেতৃত্বাধীন খেলাফত মজলিস ও ভাঙনের কবলে পড়ল। এম আর আব্দুল মতিন আপন নীড় জামায়াতে ইসলামীতে চলে গেল। আহমদ আব্দুল কাদের গং ইয়াহইয়া খানের মন্ত্রিসভার মন্ত্রী ইসহাক সাহেবকে নিয়ে গড়ে তুললো বিকল্প খেলাফত মজলিস (ইসহাক গ্রুপ)। তারা থাকল না শাইখুল হাদিসে সাহেবের সাথে। শায়খুল হাদীস আল্লামা আজিজুল হক রহ. এবং মুফতি ফজলুল হক আমিনী সাহেব ইন্তিকাল করলেন। কওমী ঘরানার রাজনীতিবিদরা অভিভাবক শূন্য হয়ে গেল। তারা হামলে পড়ল শাইখুল ইসলাম সাইয়্যিদ হোসাইন আহমদ মাদানীর খলিফা অশীতিপর বৃদ্ধ আল্লামা শাহ আহমদ শফীর উপর। তারা অখ–ভারতের দাবিতে ছিল চির সোচ্চার। শাইখুল ইসলাম আওলাদে রাসূল সা. হযরত মাদানীকে মুসলিম লীগ এবং পাকিস্তানপন্থীরা এহেন কোন অপদস্থ নেই যা তাকে করেনি। এমনকি শারীরিকভাবেও তাকে লাঞ্ছিত করেছেন। তার খলিফাগণ অনেকেই বিভিন্ন কারণে রাজনীতিবিমুখ।
যাক, আল্লামা শাহ আহমদ শফী দা. বা. আধ্যাত্মিকতা ও ব্যাক্তিত্বকে পূঁজি করে উত্থান হল শাপলা চত্বরের। শাপলার মূল দাবির সাথে কোন মুসলিম বিরোধ করতে পারে না। কিন্তু তাদের কর্মপন্থা নিয়ে কোন কোন ভাবুক এবং গবেষক আলেমের মতানৈক্য ছিল। তারপর যা হবার তা-ই হল। শোনা গিয়েছে, এখানেও নাকি কোটি কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। যার ডোনার হলো জামায়াতে ইসলামী এবং জামায়াত নিয়ন্ত্রীত কিছু সংস্থা। শত বছর ধরে যে কওমী মাদরাসার ছাত্রদেরকে সাধারণ জনগণ জানতো নিরীহ। ইসলামের শান্তির সুশীতল বাতাস বইয়ে দেয়াই তাদের কাজ। তাদের উদ্দেশ্য একমাত্র আল্লাহ পাককে খুশি করা। এই কওমী মাদরাসার ছাত্র শিক্ষকদেরকে কলংকের কালি লেপন করা হল খুব চাতুর্যের সাথে। সাধারণ মানুষের মনে কওমি মাদরাসার প্রতি একটা বৈরীভাব তৈরী করা হলো।
১৯৭১ সালে জামায়াতে ইসলামী এদেশের সাধারণ জনগণের বিরোধিতায় লিপ্ত ছিল। সাধারণ মানুষ তাদেরকে বাঁকা চোখে দেখেছে। তাদেরকে উগ্রবাদী বলেই জানত আমজনতা। তাদেরকে মনে করত ইসলামের মূল স্প্রীট থেকে দূরে। কিন্তু শাপলায় কওমী ঘরানার কোন ছাত্র শিক্ষক জ্বালাওপোড়াও এর সাথে সম্পৃক্ত না থাকলে দোষ চাপে তাদের ঘাড়ে। ফলশ্রুতিতে কিছু মানুষ ইসলামকেই উগ্রবাদের মূল কেন্দ্র ভাবতে শুরু করে। এখানেও জামায়াতে ইসলামী সফল হল। পূর্বে সাধারণ মানুষ শুধু জামায়াতকেই উগ্রবাদী ভাবতো, এখন তাদের সঙ্গে কওমী মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকরা যুক্ত করলো।
হেফাজতের মর্মান্তিক ট্রাজেডির পর কওমী মাদরাসাগুলো অনেকটা অস্তিত্ব সংকটে পড়ে যায়। এ সময় তাদের পাশে দাঁড়ালেন দারুল উলূম দেওবন্দের অন্যতম তরজুমান, বর্তমান বিশ্বের শ্রেষ্ঠতম ইসলামী স্কলার আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদ। তিনি প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে বোঝাতে সক্ষম হয়েছিলেন কওমি মাদরাসার অসামান্য অবদান। কোমায় চলে যাওয়া স্বীকৃতি আন্দোলনকে সকালের সূর্যের মতো করে আবার স্পষ্ট করলেন। ছিনিয়ে আনলেন স্বীকৃতি। সহ্য হলো না পুরনো শকুনদের। টেনে আনল মাওলানা সাদ কান্দলভী এবং তাবলীগ ইস্যু। যারা তাবলীগকে কখনো পছন্দ করত না. গাল-মন্দ করত যারা তাবলীগে যেত, যুক্তি তুলে ধরত তাবলীগে না যাওয়ার পক্ষে, তারা মায়া কান্না শুরু করে দিল। গেল! গেল! গেলরে! সবশেষ হয়ে গেল।
আমি পিছনেই উল্লেখ করেছি যে, খেলাফত মজলিস এবং ছাত্র মজলিসের গঠনতন্ত্র এমনই যে বাস্তবে থাকবে কওমী মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক। কিন্তু মনস্তাত্মিকভাবে হবে জামায়াতী। এই খেলাফত মজলিস থেকে উঠে আসা প্রোডাক্ট কথিত উগ্রবাদী এক মাওলানা, যাকে সবাই সাউন্ড গ্রেনেড হিসেবেই জানে। তাকে ভোকাল হিসেবে ফিট করল। শুরু হল আবার উগ্রবাদের বিস্তার। দুঃসময়ে কওমীদের কা-ারী আল্লামা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদকে সামাজিকভাবে হেনস্থা করার সব ষড়যন্ত্রই করা হল। মিথ্যা অভিযোগ আরোপিত হল। আসলে আমরা কওমিওয়ালারা কী বিবেক শূন্য?
হাদীসে কুদসীতে আছে, যারা আমার ওলীর সাথে শত্রুতা পোষণ করে, আমি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলাম। বাংলাদেশের কওমি মাদরাসার অন্যতম মুরব্বী ছিলেন ব্রাক্ষণবাড়িয়ার জামিআ ইউনুসিয়ার প্রিন্সিপাল ও শাইখুল হাদীস মুফতী নূরুল্লাহ রহ.। কওমি মাদরাসার সকলের কাছেই তার গ্রহণযোগ্যতা ছিল অনেক বেশি। যাকে সবাই সাহেবে কাশফ বলতেন। তিনি বলতেন- ও মিয়ারা! তোমরা ফরীদ উদ্দীন মাসঊদকে আজে-বাজে বল। আমি তো দেখি পেয়ারে রাসূল সা. তাকে সবসময় ঘিরে রাখে।
আবারও জামায়াতে ইসলামী আলেম উলামাকে বগলদাবা করেই পার পেতে চাইবে তা হলফ করেই বলা যায়। স্বাধীনতার পর থেকে মুক্তিযুদ্ধের এই পরাজিত শক্তি বার বার আলেমদের কাঁধে বন্দুক রেখে শিকারের চেষ্টা করেছে। আহলে ইলম, আহলে দেওবন্দীদের বিতর্কিত করার জন্য জামায়াতই সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছে। অনেক তরুণ নিজেই জানে না, সে জামায়াতের কণ্ঠে পরিণত হয়েছে। মিথ্যাকে সত্যের অধিক মনে করছে। আল্লাহ তাআলা সবার হিদায়াত দিন। আমীন।