রাজধানীর আদাবর থেকে ‘নিখোঁজ’ হওয়া তিন বোনকে যশোর থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। তারা বাবার সঙ্গে থাকতে চায়। তাদের বিরুদ্ধে টিকটকে আসক্তির যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, সেটির প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
শনিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) বিপ্লব কুমার সরকার এসব তথ্য জানিয়েছেন। নিখোঁজ তিন বোন হলো, রোকেয়া (১৮), জয়নব আরা (১৭) ও খাদিজা আরা (১৬)।
সংবাদ সম্মেলনে বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ২০১২ সালে তিন বোনের বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ হয়। এরপর থেকে তারা মায়ের সঙ্গে থাকতো। পরে মা ক্যানসারে মারা যান। তখন থেকে তারা দুই খালার সঙ্গে থাকত। কিন্তু বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারত না। বিভিন্ন সময়ে খালাদের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে তাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সেই ক্ষোভের কারণে তারা অসুস্থ বাবার কাছে চলে যায়।
তিনি বলেন, তিন বোন পুলিশকে জানিয়েছে, এখন থেকে তারা বাবার কাছেই থাকতে চায়, খালার সঙ্গে নয়। কারণ হিসেবে বলেছে, দুই খালার কাছে তারা যেমন আচরণ আশা করেছিল, তেমনটি পায়নি। তাই তারা বাবার কাছে চলে যায়।
উপ-কমিশনার বলেন, তাদের বাবা একজন স্কুলশিক্ষক। দীর্ঘ আট থেকে নয় বছর পর তিন বোন তাদের বাবার সঙ্গে দেখা করেছে। এর আগে মাঝেমধ্যে দাদির মোবাইল নম্বরে কল করে বাবার সঙ্গে কথা বলত। আর যশোরে বাবার কাছে যাওয়ার জন্য দাদি তাদের বিকাশের মাধ্যমে দুই হাজার টাকা পাঠান। পরে ১৮ নভেম্বর সকালে আদাবরের বাসা থেকে বের হয়ে তারা যশোরের উদ্দেশে রওনা দেয়। এরপর বাসা থেকে বের হয়ে তারা গাবতলীতে জননী পরিবহনের একটি বাসে করে যশোর চলে যায়। সেখান থেকে হামিদপুরে তাদের বাবার বাসায় পৌঁছায়।
তিন বোনকে নিয়ে পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া কী হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের আদালতে সোপর্দ করা হবে। আদালতে তারা নিজেদের বক্তব্য তুলে ধরবে। রোববার দুই বোনের এসএসসি পরীক্ষা রয়েছে, তারা পরীক্ষায় অংশ নিতে চায়। আদালত এ বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেবেন। আদালত যা বলবেন আমরা সে অনুযায়ী কাজ করব। তাদের সব ধরনের নিরাপত্তা ও সহযোগিতা করা হবে।
টিকটকে আসক্তির কারণে তিন বোন ঘর ছাড়ে- খালার এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা তাদের কাছে কোনো মোবাইল ফোন পাইনি। গণমাধ্যমে তাদের খালার বিভিন্ন অভিযোগের সত্যতা এ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
গত বৃহস্পতিবার তিন বোন আদাবরের শেখের টেকের খালার বাসা থেকে তারা বের হয়। এ ঘটনায় খালা সাজেদা নওরীন আদাবর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরে শুক্রবার র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন তাদের অবস্থান শনাক্ত করে।