সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ভুল চিকিৎসায় সুমনা নামে চার বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় একটি ক্লিনিকে ভাঙচুর চালিয়েছেন তার স্বজনরা।
মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) সকালে উপজেলার শ্যামলীপাড়ায় অবস্থিত জননী ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভাঙচুর চালান তারা। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
শিশুর মা সুমা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়ে সুমনার পিঠে ফোঁড়া ওঠে। সোমবার রাত ৮টার দিকে আমার ভাইকে নিয়ে ফোঁড়ার অপারেশনের জন্য স্থানীয় জননী ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের চিকিৎসক আহসানুল হকের কাছে যাই। সেখানে চিকিৎসক আমার মেয়েকে দেখে রক্ত পরীক্ষাসহ নানা ধরনের পরীক্ষা করতে দেয়। পরে পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে চিকিৎসক আহসানুল হক সুমনার পিঠে পরপর পাঁচটি অবশের ইনজেকশন প্রয়োগ করেন। এ সময় আমার মেয়ে চিৎকার করে বলে, মা আমি আর বাঁচব না। ইনজেকশন পুশ করার পর আমার মেয়ের খিঁচুনি শুরু হয় এবং ঘটনাস্থলেই মারা যায়।
শিশু সুমনার মামা মুনিয়া মিয়া বলেন, আমার ভাগনিকে নিয়ে যখন ক্লিনিকে গেলাম তখন চিকিৎসক তাকে দেখে অপারেশনের কথা বলেন এবং কিছু ওষুধ আনতে বলেন। এরপর অবশের জন্য সুমনাকে পরপর পাঁচটা ইনজেকশন প্রয়োগ করেন। বলেন, একটু ঠান্ডা হলে নিয়ে আসবেন ফোঁড়া কেটে বের করে দেওয়া হবে। এরপর সুমনার খিঁচুনি শুরু হয়। তখন অক্সিজেন দেওয়ার জন্য তাকে একটা রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর ডাক্তার এসে বলেন সুমনার অপারেশনের জন্য আপনাদের একটা স্বাক্ষর লাগবে। ডাক্তার এ কথা বলে আমাদের কাছ থেকে জোর করে স্বাক্ষর নিয়ে নেন। পরে আমাদের আর রুমের ভেতরে ঢুকতে দেয়নি। আমরা এ চিকিৎসকের শাস্তি চাই।
এ বিষয়ে জননী ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনোয়ারুল ইসলাম মুক্তা বলেন, শিশুটি মৃগী রোগী ছিল। ডাক্তার তাকে অবশ করার ইনজেকশন দিলে তার খিঁচুনি ওঠে। পরে তাকে আইসিইউতে রাখা দরকার মনে করে এখান থেকে রেফার করা হয়। পরে তাকে এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় বলে শুনেছি। এ বিষয়ে কোনো দায় নিলে চিকিৎসক নিবেন। কিন্তু আমার প্রতিষ্ঠানে কেন ভাঙচুর করে ক্ষতি করা হলো। এ নিয়ে আমি সাধারণ ডায়েরি করবো।
এ বিষয়ে উল্লাপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবির বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। কিন্তু আমি বাইরে একটি মিটিংয়ে থাকায় বিস্তারিত বলতে পারছি না।
তবে শুনেছি ভুক্তভোগী শিশুর পরিবার থেকে থানায় অভিযোগ দিতে আসা হয়েছে। আমি কার্যালয়ে ফিরে এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।