রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে সিসিইউতে চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, দেশনেত্রী অনেক অসুস্থ। এখন তার জীবনকে হুমকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। দেশের টেকনোলজি দিয়ে তার সঠিক রোগ নির্ণয় সম্ভব হচ্ছে না। তাই চিকিৎসকরা বার-বার তাকে বিদেশে এডভান্স সেন্টারে চিকিৎসা জন্য নিতে বলছেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, কেন আমরা দেশনেত্রীর বাইরে চিকিৎসার কথা বলছি, কী কারণে-তা আমাদের সবারই জানা উচিত। তা হচ্ছে- খালেদা জিয়ার যে অসুখ তা প্রধানত পরিপাকতন্ত্রের। কোন জায়গায় তার রক্তপাত হচ্ছে- এটাকে বের করার জন্য আমাদের দেশের শ্রেষ্ঠ ডাক্তাররা গত কয়েকদিন ধরে চিকিৎসার যে পদ্ধতি আছে সেই অনুযায়ী বিভিন্ন রকম কাজ করেছেন। কিন্তু একটা জায়গায় এসে তারা আর এগুতে পারছেন না। কারণ সেই ধরনের কোনো টেকনোলজি দেশে নেই। যে টেকনোলজি দিয়ে সেখানে পৌঁছাতে পারেন। যে কারণে চিকিৎসকরা বার বার বলছেন, দেশনেত্রীকে একটি এডভান্স সেন্টারে নেওয়া দরকার। যেখানে এ ডিভাইসগুলো আছে, টেকনোলজি আছে, যন্ত্রপাতিগুলো আছে, যেখানে গেলে তার সঠিক যে রোগ সেই রোগের জায়গাটা তারা ধরতে পারবেন। পরিপাকতন্ত্রের যেখান থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে সেটা বন্ধ করা।
মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র আর খালেদা জিয়াকে আলাদা করা যাবে না। খালেদা জিয়ার মুক্তি, তার চিকিৎসা, তার বেঁচে থাকা এ জাতির কাছে খুবই জরুরি। এ সরকার দীর্ঘকাল থেকে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে ফেলার জন্য, একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করার কাজ করছে। আজকে নয়, এটা শুরু হয়েছে ১/১১ থেকে এবং তারই পরিণতি হিসেবে আজকে খালেদা জিয়া মৃত্যুর প্রহর গুনছে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, তারা ভুলে যায় ১/১১ তে শেখ হাসিনা যখন গ্রেফতার হলেন, তখন খালেদা জিয়া বিবৃতি দিয়েছিলেন তার মুক্তির জন্য। গণতন্ত্রে বিশ্বাস করা এমন এক নেত্রী। আজকে তাকে আপনারা মৃত্যুর দিকে ঠেকে দিচ্ছেন। কেন দিচ্ছেন আমরা সবাই বুঝি। আপনি ভাবছেন তাকে সরিয়ে দিলে আপনার সামনে বড় কাঁটা সরে যাবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, স্বৈরাচারের চেয়ে ফ্যাসিবাদের পার্থক্য বিশাল। সেদিন একটি অংশের বিরুদ্ধে লড়তে হয়েছে, আজকে লড়তে হচ্ছে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে। এখন গুলি করে পুলিশ, গুলি করছে রাষ্ট্র- বাংলাদেশকে সুপরিকল্পিতভাবে বিরাজনীতিকরণ করার জন্য, রাজনীতিকে সরিয়ে ফেলার জন্য। বাংলাদেশকে সুপরিকল্পিকভাবে একটি ফ্যাসিস্ট এটা শুরু হয়েছে ওয়ান ইলেভেন থেকে। সেই চক্রান্তের কারণে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া মৃত্যুরপ্রহর গুনছেন।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান খান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ।