নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীতে একের পর এক সড়ক দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনা ঘটেই চলেছে। নটর ডেম শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর রামপুরায় মারা যায় এক এসএসসি পরীক্ষার্থী। সবশেষ এই তালিকায় যুক্ত হন গ্রিন ইউনিভার্সিটির টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মেহেদী হাসান লিমন।
শুক্রবার রাতে রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের কাউলা এলাকায় ট্রাকের চাপায় মারা যান তিনি। বড় ছেলে হিসেবে স্বপ্ন ছিল পড়াশোনা শেষ করে পরিবারের হাল ধরবে। সড়কে অকালে মারা যাওয়া অন্য শিক্ষার্থীদের মতো তার স্বপ্নও অধরা থেকে গেল। বাড়ল শুধু স্বজন-বন্ধুদের আক্ষেপ।
ধানমন্ডির ঝিগাতলার নানার বাসা থেকে খালাকে দেখে মোটরসাইকেলে করে নিজ বাসা কাউলায় ফিরছিলেন লিমন। কিন্তু ফেরা হয়নি। লরিটি তাকে ধাক্কা দিয়ে বুকের ওপর দিয়ে চলে যায়। মোটরসাইকেলটিও দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এসব কথা জানান লিমনের খালু মো. ইমাম হোসেন।
তিনি জানান, লিমনের বাবা সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট মো. মোফাজ্জল হোসেন বর্তমানে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করে সংসার চালিয়ে নিচ্ছেন। লিমনরা দুই ভাই, তাদের একটিমাত্র বোন রয়েছে। গ্রিন ইউনিভার্সিটিতে ইঞ্জিনিয়ারিং চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন লিমন। চেয়েছিলেন পড়াশোনা শেষ করে পরিবারের হাল ধরতে।
দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লিমনের মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। গ্রামের বাড়ি জয়পুরহাট জেলার পাঁচবিবি থানার দমদমা এলাকায় জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হবে।
লিমনকে চাপা দেওয়া লরির চালক পালিয়ে গেছেন। লরিটি আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা মোফাজ্জল হোসেন বাদী হয়ে বিমানবন্দর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিমানবন্দর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আসাদুজ্জামান শেখ।
২৪ নভেম্বর বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর গুলিস্তানে দক্ষিণ সিটির ময়লার গাড়ির ধাক্কায় নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী নাঈম হাসান মারা যায়। সে ওই কলেজের মানবিক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিল। ২৯ নভেম্বর রামপুরায় অনাবিল পরিবহনের বাসচাপায় একরামুন্নেসা স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার্থী মাইনুদ্দীন ইসলাম দুর্জয় নিহত হয়।
শিক্ষার্থীদের মৃত্যুর বিচার, নিরাপদ সড়কসহ বেশ কয়েকটি দাবিতে রাজধানীতে আন্দোলন চলছে। দাবি পূরণ না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা একের পর এক কর্মসূচি দিচ্ছে। এর মধ্য দিয়েই গ্রিন ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী রাজধানীর সড়কে মারা গেলেন।
বিএসডি/ এলএল