ধর্ম ডেস্ক:
মুমিনদের স্থায়ী ঠিকানার নাম জান্নাত। জান্নাত শব্দের অর্থ হলো বাগান বা উদ্যান। আর এই সাজানো বাগানটি মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা ‘আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা’ একদিন তার মুমিন বান্দাহদের উপহার দিবেন।
দুনিয়াতে অফিসের মালিক তার কর্মচারীর উত্তম কর্মের ফলে তাকে খুশি করার জন্য উপহার দিয়ে থাকেন। তেমনি পরকালেও ‘আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা’ মুমিন বান্দাহকে তার উত্তম কর্মের জন্য উপহার হিসেবে জান্নাত দেবেন। দুনিয়ার জীবন হলো ক্ষণস্থায়ী। আর পরকালের জীবন হলো চিরস্থায়ী। এই ক্ষণস্থায়ী জীবনকে আমাদের উত্তমরূপে গড়ে তুলার জন্য রাসূল (সাঃ) এর আদর্শকে অনুসরণ করতে হবে। একমাত্র রাসূল (সাঃ) এর আদর্শই মুমিন ব্যক্তির জন্য উত্তম মডেল। তিনি সর্বক্ষেত্রে ছিলেন একজন সফল ব্যক্তি। বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় এক অনন্য নজির স্থাপন করেন তিনি। তার দেখানো পথ মানুষকে অন্ধকার জীবন থেকে আলোর পথে এনে দিয়েছে। ‘আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা’ মহাগ্রন্থ আল-কোরআনে বলেন: “তোমাদের জন্য রাসুল (সাঃ) জীবনেই রয়েছে সর্বোত্তম আদর্শ (সূরা আল আহযাব: ২১)।
দুনিয়ায় সফল হওয়ার জন্য আমরা কত কিছুই করে থাকি। অনেকের চিন্তা সুন্দর বাড়ি, গাড়ি, টাকা। এগুলো অর্জন করার জন্যও অনেকেই বেছে নিয়েছে অসৎ পথ। আবার অনেকের ধারণা বাড়ি, গাড়ি, টাকা যাদের আছে তারাই হলেন সফল ব্যক্তি। প্রকৃত সফল ব্যক্তি তারাই যারা পরকালে জান্নাতে যাওয়ার জন্য দুনিয়ার জীবন থেকে পাথেয় সংগ্রহ করে। একজন শ্রমিকের শ্রম ছাড়া যেমন ইমারত নির্মাণ করা সম্ভব নয়। তেমনি মুমিনের আমল ছাড়া জান্নাতে যাওয়া সম্ভব নয়। ‘আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা’ কোরআনে বলেন: হে নবী আপনি সুসংবাদ প্রদান করুন যারা ঈমান এনেছে এবং নেক আমল করেছে, নিশ্চয়ই তাদের জন্য রয়েছে এমন জান্নাত যার তলদেশ দিয়ে ঝর্ণাসমূহ প্রবাহিত হবে (সূরা বাকারা: ২৫)।
আল্লাহ মুমিন নর-নারীকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন জান্নাতের। যার নিম্নদেশে ঝর্ণাধারা প্রবাহমান, সেথায় তারা চিরদিন থাকবে। এই চিরদিন সবুজ শ্যামল জান্নাতে তাদের জন্য রয়েছে প্রবিত্র পরিচ্ছন্ন বসবাসের স্থান এবং আল্লাহর সন্তোষ লাভ করে তারা হবে সৌভাগ্যবান আর তা হবে তাদের জন্য সবচেয়ে বড় সাফল্য (সূরা তাওবা: ৭২)। একজন মুমিনের সফল তখনই হবে যখন সে জান্নাতে যাবে। একজন ব্যবসায়ীর উদ্দেশ্য হলো তার ব্যবসায়ের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা। আর একজন ছাত্রের উদ্দেশ্য হলো সুশিক্ষা অর্জন করে ভালো ক্যারিয়ার গঠন করা। তেমনি বিশাল এই পৃথিবী উপভোগ করার জন্য ‘আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা’ মানবজাতিকে কোন উদ্দেশ্য ছাড়া পাঠায়নি। মহাগ্রন্থ আল-কোরআনে ‘আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা’ বলেন: আমি জ্বিন ও মানুষকে অন্য কোন উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করিনি, কেবল এজন্য সৃষ্টি করেছি যে তারা আমার বন্দেগী করবে (সূরা যারিয়াহ: ৫৬)। সুতরাং জান্নাতে যেতে হলে মুমিন বান্দাহকে ‘আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার’ বন্দেগী করতে হবে। ঈমানদারগণ সকলেই বলে জান্নাতে যেতে চাই।
আমরা কখনো কি ভেবে দেখেছি ? জান্নাতে যাওয়ার জন্য প্রতিদিন দুনিয়ায় কতটুকু পাথেয় সংগ্রহ করছি। তাহলে রাতে ঘুমানোর পূর্বে প্রতিদিন আত্মসমালোচনার অভ্যাস গড়ে তুলি। জান্নাতে যাওয়ার জন্য আজকের দিনে গতকালের চেয়ে কতটুকু পাথেয় সংগ্রহ করেছি।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা’ আমাদের সবাইকে বোঝার তাওফিক দান করুন, আমিন!
লেখক: ইয়াসিন আহমেদ
বিএসডি / আইপি