জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলনের চাপ সহ্য করতে না পেরে দৃষ্টি ভিন্ন দিকে নিতে সরকারের মন্ত্রীরা জিয়া পরিবারের সদস্যদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন— এমন দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার আন্দোলন দুর্বার হয়ে উঠেছে। এটা আওয়ামী লীগ সরকার সহ্য করতে পারছে না। ফলে তারা এখন আমাদের দৃষ্টিটাকে এবং আমাদের কথাবার্তাকে অন্যদিকে সরিয়ে দিতে খালেদা জিয়ার পরিবার নিয়ে কথা বলছেন। মাথায় রাখতে হবে, এরা আমাদের দৃষ্টিকে অন্যদিকে সরাতে চায়। কথা পরিষ্কার, দৃষ্টি যেদিকে সরাতে চান না কেন, আমাদের একটাই কথা খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসা।
সোমবার (৬ ডিসেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং অবিলম্বে তার চিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণের দাবিতে এ বিক্ষোভ-সমাবেশ করেন বিএনপির সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানরা। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ বিক্ষোভ হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টির কারণে তা নয়াপল্টনে অনুষ্ঠিত হয়।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘জনগণের মধ্যে, আওয়ামী লীগ কিংবা বিএনপি সবার মধ্যে একটাই কথা, অসুস্থ খালেদা জিয়ার কী অপরাধ? তাকে কেন বিদেশে পাঠানো হয় না? কেন চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না? কেন তিলে তিলে মেরে ফেলা হচ্ছে? এটা সারা দেশের মানুষের কথা।’
জনমত একে একে বিএনপির দিকে এগিয়ে আসছে— উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তারপরও কেন আমরা কিছু করতে পারলাম না? আমাদের অনেক কিছু করার আছে। খালেদা জিয়া আমাদের অনেক কিছু দিয়েছেন। এখানে (অনুষ্ঠানে) একজন বলেছেন, আমরা তার পতাকা দিয়ে নির্বাচনে পাস করেছি। এটা যদি সত্যি হয়, এ নেত্রী আমাদের দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র দিয়েছেন, সংসদীয় গণতন্ত্র দিয়েছেন, আমরা মন্ত্রী-এমপি হয়েছি; এখন আমাদের দেওয়ার পালা।’
বিএনপিকে ধ্বংস করতে হবে, বিএনপির ওপর অত্যাচার করতে হবে, এজন্যই সরকার খালেদা জিয়াকে আটকে রেখেছে বলেও দাবি করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য। বলেন, আজ যখন তিনি অসুস্থ, তার পরিবারের এক শিশুবাচ্চাকে নিয়েও কথা বলছেন সরকারের মন্ত্রীরা!
তথ্য প্রতিমন্ত্রীর দিকে ইঙ্গিত করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘এ অসভ্য লোকটার নাম ধরে কিছুদিন আগে বকাবকি করেছিলাম। কারণ, তিনিও আমার নাম ধরে বকাবকি করেছিলেন। তিনি করুক, তাতে কিছু যায় আসে না। কিন্তু কথা হলো রাস্তা থেকে ধরে এনে কাউকে মন্ত্রী বানিয়ে দেবেন, আর দেশের লোকরা তাদের পূজা করবে— এটা ভাবার কোনো কারণ নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘লোকটার অসভ্যতার প্রমাণ কাগজে-কলমে আছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসেছে, এ লোকটা ডিসকোতে নাচানাচি করেছে। তাকে ধরে এনে মন্ত্রী বানিয়েছে। তাকে আমাদের মন্ত্রী মানতে হবে! আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা যারা একজন মুমূর্ষু মানুষকে নিয়ে এবং তার পরিবারকে নিয়ে আজেবাজে কথা বলেন তারা কখনই সভ্য মায়ের সভ্য সন্তান নন।’
খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা হবে বলেও উল্লেখ করেন মির্জা আব্বাস।
অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘আমাদের ইতিহাস বলে, আমরা সবসময় শত্রুকে নাস্তানাবুদ করেছি। নতুন করে সেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। ফ্যাসিবাদকে বিদায় দিতে হবে। পুলিশি পাহারায় ফ্যাসিবাদ সরকার বেশিদিন টিকবে না। আমরা যদি সফল আন্দোলন গড়ে তুলতে পারি, পুলিশ জনগণের পক্ষে আসবে। পুলিশ কখনও জনগণের বিপক্ষে লড়াই করবে না। এটাই ইতিহাসের বাস্তব সত্য কথা।’
বিক্ষোভ-সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ এবং বিভিন্ন উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানরা।
বিএসডি/ এসএ