তবে দুজনের কাউকে এখনই কারাগারে নেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন জ মিন তুন। তিনি বলেন, নেপিডোতে যেখানে তাঁরা এখন আছেন আপাতত সেখানেই তাঁদের রেখে অপর মামলাগুলোর শুনানি হবে। এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, নেপিডোর যে অজ্ঞাত স্থানে সু চি ও উয়িন মিন্তকে বন্দী রাখা হয়েছে তার উল্লেখ করেছেন মিন তুন। তবে এ ব্যাপারে বিস্তারিত উল্লেখ করেননি তিনি।
এর আগে গত মাসে বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জ মিন তুন দাবি করেছিলেন, সু চি ভালো অবস্থায় আছেন। তখন তিনি বলেন, ‘আমরা তাঁকে (সু চিকে) বন্দী করলেও বাড়িতে আপনজনদের মধ্যে থাকার সুযোগ দিয়েছি। তিনি তো গৃহবন্দী।’
সু চির সাজার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ক্ষোভ
অং সান সু চির বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার পরপরই এর নিন্দা জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। সংগঠনের প্রচারবিষয়ক আঞ্চলিক পরিচালক মিং ইয়ু হা বলেন, ‘ভুয়া অভিযোগে অং সান সু চিকে কঠোর সাজা দেওয়া হয়েছে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দেশের ভেতরে যে বিরোধী মত দমন ও স্বাধীনতা হরণের চেষ্টা চালাচ্ছে—এ সাজা ঘোষণার ঘটনাটি তারই সর্বশেষ দৃষ্টান্ত।’
মিয়ানমারে নিয়োজিত ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা রিচার্ড হরসি এএফপিকে বলেন, সেনাবাহিনীর ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য এ সাজা ঘোষণা করা হয়েছে। সু চিকে কারাগারের পাঠানো হবে না বলে মনে করেন তিনি। হরসি বলেন, তাঁকে (সু চি) কারাগারে পাঠানো হলে তা হবে বিস্ময়ের ব্যাপার। খুব সম্ভবত এবারের সাজা এবং পরে যেসব সাজা ঘোষণা করা হবে, তার সবগুলোই তিনি তাঁর বাড়িতে অথবা সরকারের গেস্টহাউসে ভোগ করবেন।
মিয়ানমারে চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। গ্রেপ্তার করা হয় অং সান সু চিসহ তাঁর দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) শীর্ষ নেতাদের। সেনা হেফাজতে নেওয়ার চার মাস পর গত জুনে বিচার শুরু হয় সু চির। সেনাবিরোধী উসকানি, রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা আইন ভঙ্গসহ তাঁর বিরুদ্ধে ১১টি অভিযোগ আনা হয়েছে। এসব মামলার সব কটিতে দোষী সাব্যস্ত হলে এক শ বছরের বেশি কারাদণ্ড হতে পারে সু চির।
রাজধানীর নেপিডোতে যে বিশেষ সেনা আদালতে সু চির বিচারকাজ চলছে, সেখানে সাংবাদিকদের প্রবেশের অনুমতি নেই। সু চির আইনজীবীরাও সংবাদমাধ্যমে কথা বলতে পারেন না।
সু চির পাশাপাশি আটক থাকা এনএলডির অন্য সদস্যদেরও বিচার চলছে। গত মাসের শুরুতে সাবেক একজন মন্ত্রীকে ৭৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সু চির এক ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে দেওয়া হয়েছে ২০ বছরের কারাদণ্ড।
সূত্র:এএফপি
বিএসডি/ এলএল