চীনের পূর্বাঞ্চলীয় জিয়াংশু প্রদেশে প্রথমবারের মতো মানবদেহে এইচ১০এন৩ বার্ড ফ্লু শনাক্ত হয়েছে। গত মঙ্গলবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে দেশটির জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন (এনএইচসি)।
বার্ড ফ্লুর এই ধরনটিতে আক্রান্ত ওই ব্যক্তি ঝেনজিয়াং শহরের বাসিন্দা। গত ২৮ এপ্রিল তিনি জ্বরসহ একাধিক উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। এর এক মাস পর ওই ব্যক্তির শরীরে এইচ১০এন৩ এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হয়।
এনএইচসি জানিয়েছে, বার্ড ফ্লুতে আক্রান্ত ওই ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল। শিগগিরই তাকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হবে।
তবে ওই লোক কীভাবে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলেন তা জানায়নি চীনা কর্তৃপক্ষ। তার ঘনিষ্ঠ আর কেউ এ ভাইরাসে আক্রান্ত নন বলেও জানিয়েছে দেশটি।
চীনা স্বাস্থ্য কমিশনের তথ্যমতে, এইচ১০এন৩ কম সংক্রামক ও তুলনামূলক কম গুরুতর। প্রধানত পোল্ট্রি খাতে দেখা যাওয়া ভাইরাসের এই ধরনটি ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি কম।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার আন্তঃসীমান্ত প্রাণীরোগ কেন্দ্রের আঞ্চলিক গবেষণাগার সমন্বয়ক ফিলিপ ক্লায়েস বলেন, ভাইরাসের এই ধরনটি খুব পরিচিত নয়। ২০১৮ সালের আগে ৪০ বছরে ভাইরাসটির মাত্র ১৬০টি আইসোলেট শনাক্ত হয়, যার বেশিরভাগই ছিল এশিয়া-উত্তর আমেরিকার বন্য ও জলচর পাখিদের মধ্যে। এখন পর্যন্ত মুরগির শরীরে ধরনটি পাওয়া যায়নি।
তবে চীনে শনাক্ত ধরনটি আগের ভাইরাসটিই নাকি তাতে নতুন কোনো কিছু যোগ হয়েছে তা নিশ্চিত হতে জিনগত বিশ্লেষণ জরুরি বলে জানিয়েছেন এ বিশেষজ্ঞ।
জানা যায়, চীনে বর্তমানে এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার অনেকগুলো ধরন রয়েছে এবং সেগুলো মাঝেমধ্যে মানুষকে আক্রান্ত করে, বিশেষ করে যারা পোল্ট্রি খাতে কাজ করেন তাদের। তবে ২০১৬-১৭ সালে এইচ৭এন৯ নামে একটি ধরনে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু ছাড়া সেগুলো ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ার আর কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এনএইচসির তথ্যমতে, চীনের ওই ব্যক্তি ছাড়া এখন পর্যন্ত বিশ্বে আর কেউ এইচ১০এন৩ ধরনটিতে আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া যায়নি।
সূত্র: রয়টার্স