নিজস্ব প্রতিবেদক:
শীতের আগমনিবার্তা নিয়ে অতিথি পাখিদের কোলাহলে মুখরিত হয়ে উঠেছে বগুড়ার শেরপুর উপজেলার থামারকান্দির ঝাঁঝর ও গরফার বিল। এসব অতিথি পাখি দেখতে প্রতিদিনই জেলা শহরসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ ভিড় জমাচ্ছে। বিলের পানিতে ভাসছে সাদা চাঁদমালা ফুল। এই ফুলের ফাঁকে ফাঁকে ভাসছে বিলের অতিথি পাখি পাতিসরালি। মাঝেমধ্যে এ পাখি ডানা মেলে আকাশে উড়াল দিচ্ছে।
বগুড়ার শেরপুর উপজেলা শহর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার পূর্ব দিকে খামারকান্দি ইউনিয়নের ঝাঝর ও গরফার বিলে দেখা মিলবে এমন দৃশ্যের। এই বিলে বিভিন্ন ধরনের পাখির দেখা মেলে। এর মধ্যে রয়েছে হাঁস, বালিহাঁস, মাছরাঙা, পানকৌড়ি, শামুকখোল, বিভিন্ন ধরনের বক ও শালিক।
এলাকার স্থানীয় মামুন জানান, বিলের পাশে তাদের চাষের জমি। জমি পরিচর্যার জন্য তাদের নিয়মিত আসতে হয়। এ সময় বিলের পাখির ডাকাডাকিতে মন ভরে যায়। যারা বিলের পাশ দিয়ে যাতায়াত করেন, তারা একটু সময়ের জন্য হলেও পাখির ডাক শুনতে বিলের সামনে দাঁড়িয়ে যান। মাঝেমধ্যে পাখি শিকার করতে আসা অপরিচিত ব্যক্তিদের বিলের আশপাশে দেখা যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের দেখলে বাধা দেন।
পরিবেশ প্রতিরক্ষা সংস্থার সভাপতি সোহাগ রায় বলেন, ‘আমাদের দেশেরই পাখি পাতিসরালি। দুই বছর ধরে এই পাখি প্রজননের সময় এ বিলে এসে থাকে। জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত পাখিগুলোর প্রজননের সময়। স্ত্রী পাখি একসঙ্গে সাত থেকে ১২টি ডিম দেয়। ডিম ফুটে বাচ্চা বের হতে ২২ থেকে ২৪ দিন সময় লাগে। এগুলোর প্রধান খাবার পানিতে থাকা জলজ উদ্ভিদ, নতুন কুড়ি, শস্যদানা, ছোট মাছ, ব্যাং, শামুক ও কেঁচো ইত্যাদি। এ পাখির মাথা, গলা ও বুক বাদামি, পা কালো আর ঠোঁট ধূসর-কালচে রঙের। পিঠে হালকা বাদামির ওপর নকশা আঁকা এবং লেজের তলা সাদা।
ভাস্কার এগ্রো পার্কের হিসাবরক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, প্রতি বছরই শীতকালে বিভিন্ন ধরনের শত শত পাখি আসে এই বিলে। এলাকার মানুষ পাখিদের মারতে দেয় না। এমনকি ঢিলও ছুড়তে দেয় না।
বগুড়া বন্য প্রাণী সংরক্ষণ কমিটির ফজলে বারী রতন জানান, অতিথি পাখিদের যেন কোনো সমস্যা না করে সেজন্য বিলের আশপাশের মানুষদের সচেতন করা হয়েছে। এলাকার মানুষই এখন পাখিদের সংরক্ষণ করে।
বিএসডি/ এলএল