ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি:
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলায় রেল বিভাগের অনুমোদিত ১৫টি লেভেল ক্রসিংয়ের মধ্যে ১২টিই অরক্ষিত। এসব অরক্ষিত লেভেল ক্রসিংয়ে নেই কোনো গেটম্যান। শুধু সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড দিয়েই দায় এড়ানোর চেষ্টা করছে রেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সব লেভেল ক্রসিংয়ে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ডও নেই। যেগুলোতে রয়েছে তার বেশির ভাগই অবহেলা আর অযত্নে পড়ে আছে। মানুষ ভুলেও সেদিকে চোখ ফিরে তাকায় না।
ঠাকুরগাঁও পীরগঞ্জ-ঢাকা রেল রুটে প্রতিদিন ঢাকাগামী তিনটি আন্তঃনগর, রাজশাহীগামী দুটি মেইল এবং একটি লোকাল ট্রেন চলাচল করে। অনুমোদিত ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি লেভেল ক্রসিং রয়েছে। অনুমোদিত এবং অনঅনুমোদিত মিলে ২০টির অধিক লেভেল ক্রসিং দিয়ে প্রতিনিয়ত ভারি যানবাহন ছাড়াও রিকসা, ভ্যান, সাইকেল, মোটরসাইকেলসহ অসংখ্য মানুষ যাতায়াত করেন। অরক্ষিত লেভেল ক্রসিংগুলোর মধ্যে পৌর শহরের জগথা ও মিত্রবাটি এবং ভোমরাদ ইউনিয়নের মিলন বাজার ও সেনুয়া বাজার গুরুত্বপূর্ণ। এসব লেভেল ক্রসিং দিয়ে যানবাহন ও মানুষ বেশি চলাচল করে।
চলতি বছরে এ উপজেলায় ট্রেনে কাটা পড়ে সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে জগথা লেভেল ক্রসিংয়ে জেলা জজশীপের দুই কর্মচারী আন্তঃনগর ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যায়। কয়েক দিন আগে আরেক জনের মৃত্যু হয়। সেনুয়া-মিলন বাজার এলাকায় দুইজন এবং সাগুনী-বাশগাড়া এলাকায় আরো দুইজন ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যায়। গত মঙ্গলবার রাতেও সেনুয়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। জগথা লেভেল ক্রসিংয়ে জেলা জজশীপের দুই কর্মচারী ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যাওয়ার পর স্থানীয়রা এ লেভেল ক্রসিংয়ে বাঁশের বেরিয়ার দিয়ে সুরক্ষার ব্যবস্থা করেন। ট্রেন আসার সময়ে উপস্থিত যে কেউ বাঁশের বেরিয়ার নামিয়ে দেয়। আবার ট্রেন চলে গেলে তুলে দেয়।
এব্যাপারে পীরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা ইকরামুল হক বলেন, এ লেভেল ক্রসিংগুলো অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। প্রায় দুর্ঘটনা ঘটছে। অন্তত শহরের গুরুত্বপূর্ণ লেভেল ক্রসিংগুলো সুরক্ষার ব্যবস্থা করা দরকার।
পীরগঞ্জ রেল ষ্টেশনের সহকারি মাস্টার সোহরাব হোসেন জানান, ভোমরাদ হতে পার্শ্ববর্তী বোচাগঞ্জের সুলতানপুর স্টেশন পর্যন্ত ১৫টি লেভেল ক্রসিং রয়েছে। এর মধ্যে শহরের বটতলা, শহীদ অধ্যাপক গোলাম মোস্তাফার সমাধিস্থল সড়ক এবং বাকের পুলের কাতিহার লেভেল ক্রসিংয়ের সুরক্ষার জন্য গেটম্যান ও বেরিয়ার আছে। বাকিগুলো ঝুঁকিপূর্ণ।
বিএসডি/ এলএল