বিএসডি/জেজে
মাদকবিরোধী অভিযানে গেলে খেলনা পিস্তল ঠেকিয়ে র্যাব সদস্যের মাথায় গুলি করার হুমকি দিয়েছে মাদক কারবারিরা। এ ছাড়া তাদের চাপাতি হামলার শিকার হয়েছেন র্যাব কনস্টেবল রোকনুজ্জামান। এ ঘটনায় তার হাতের আঙুল কেটে গেছে। পরে তাকে গোদাগাড়ী ৩১ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার বিজয়নগর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় তিন মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছে ১৭৭ বোতল ফেনসিডিল, খেলনা পিস্তল ও চাপাতি উদ্ধার করে র্যাব। শুক্রবার সকালে র্যাবের পক্ষ থেকে থানায় মামলা করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- গোদাগাড়ী পৌরসভার মাদারপুর ডিমভাঙা মহল্লার শাহরিয়ার নাজিম ওরফে জয় (২১), বুজরুক রাজারামপুর হলের মোড় এলাকার পরশ ওরফে মাহিদ হাসান (১৯) ও সিঅ্যান্ডবি গড়ের মাঠ এলাকার তারেক মাহফুজ তারেক (১৯)। তারা সবাই মাদক ব্যবসায়ী।
গোদাগাড়ী থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ফেনসিডিলসহ গ্রেফতার হওয়া শাহরিয়ারের মা আমেনা বেগম ওরফে মুক্তি একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তার প্রথম স্বামী শহিদুল ইসলামের ছেলে শাহরিয়ার। মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ায় আমেনা বেগম মুক্তির সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ করেন শহিদুল। মুক্তি পরে মতিউর রহমান মতি নামে গোদাগাড়ীর রেলবাজারের আরেক মাদক ব্যবসায়ীকে বিয়ে করেন। ২০১৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি মতি র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে মারা যান।
র্যাবে সূত্র জানায়, স্বামী মতি মারা গেলে গোদাগাড়ী পৌর যুবলীগের নেতা নুরুজ্জামান ওরফে কাজলকে বিয়ে করেন মুক্তি। কিছুদিন আগে একটি মাদক মামলায় নুরুজ্জামান কাজল, আমেনা মুক্তি ও তার ছেলে শাহরিয়ার জয়কে রাজশাহী মহানগরী থেকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠায় জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। সম্প্রতি তারা জামিনে বের হন। তারপর আবার র্যাবের কাছে মাদকসহ গ্রেফতার হয় শাহরিয়ার নাজিম জয়।
র্যাব সূত্র আরও জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর বিজয়নগর এলাকায় ফেনসিডিল বিক্রির জন্য অপেক্ষা করছিল জয়সহ অপর দুই সহযোগী। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৫ রাজশাহীর মোল্লাপাড়া ক্যাম্পের কমান্ডার ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মারুফ হোসেন খানের নেতৃত্বে র্যাবের একটি দল ঘটনাস্থলে অভিযান যায়। তখন চারজন দুটি বস্তা ফেলে পালানোর চেষ্টা করেন।
র্যাব সদস্যরা তাদের চারদিক থেকে ঘিরে ফেললে পরশ তার হাতে থাকা ধারালো চাপাতি দিয়ে কনস্টেবল রোকনুজ্জামানের মাথায় আঘাতের চেষ্টা করে। এ সময় র্যাব সদস্য রোকনুজ্জামানের একটি আঙুল কেটে যায়।
আর শাহরিয়ার নাজিম জয় তার কোমর থেকে একটি খেলনা পিস্তল বের করে এক র্যাব সদস্যের মাথায় ধরে বলে— ‘গুলি করে দেব’। এভাবে তারা ভয় দেখিয়ে পালানোর চেষ্টা করলেও র্যাব সদস্যরা তিনজনকে ধরে ফেলেন। একজন পালিয়ে যায়। আহত র্যাব সদস্য রোকনুজ্জামান গোদাগাড়ী ৩১ শয্যা হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
র্যাব কমান্ডার মারুফ হোসেন খান বলেন, ঘটনার সময় আমরা বুঝতেই পারিনি পিস্তলটি খেলনা ছিল। হাতে না নিলে বোঝার উপায় নেই। পিস্তলটি হাতে নেওয়ার পর বুঝতে সক্ষম হয়েছি সেটি খেলনা পিস্তল। এই খেলনা পিস্তল দিয়েই হয়তো মাদক ব্যবসায়ী মানুষকে ভয়ভীতি দেখানোসহ নানা অপকর্ম করে আসছিলেন।
বিএসডি/জেজে