নিজস্ব প্রতিবেদক:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃত্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী ইলমা চৌধুরী মেঘলার (২৪) মৃত্যুর ঘটনায় তার বাবার দায়ের করা হত্যা মামলায় স্বামী ইফতেখার আবেদীনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। লেখাপড়া শেষ করার আগেই বিয়ে হয় কানাডা প্রবাসী ইফতেখার আবেদীনের সঙ্গে। ইচ্ছে ছিল মাস্টার্স শেষ করে শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত হওয়ার। কিন্তু সেই আশা অপূর্ণই থেকে গেলো ইলমার।
ইলমা চৌধুরী মেঘলার বাবা জানিয়েছেন, আমার মেয়ে নৃত্যকলায় পড়ত বলে তার স্বামী মনে করতো তার চলাফেরা অনেক খারাপ। সে কারণে আমার মেয়ে তার চুল কেটে ছোট করে হিজাব পরা শুরু করে। কিন্তু তারা এক ভণ্ড পীরের মুরিদ হওয়ায় আমার মেয়েকে সবসময় আটকে রাখত। সবশেষ তারা আমার মেয়েকে হত্যাই করলো।
নিহত ইলমার বাবা সাইফুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ইলমা আমাকে বলেছিল বিসিএস পরিক্ষা দিয়ে শিক্ষক হবে। হঠাৎ তার সঙ্গে ইফতেখারের পরিচয় হয় ফেসবুকে। আমরা প্রথমে রাজি ছিলাম না পরে অনেক চাপাচাপির পর রাজি হই। তারা আমার মেয়েকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে। তারা এক ভণ্ড পীরের মুরিদ হওয়ায় আমার মেয়েকে সবসময় আটকে রাখত। বাইরে বের হতে দিত না।তার শরীরের সব জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার মা ও কথিত বাবা সবাই মিলে আমার মেয়েকে মেরে ফেলেছে।
তিনি আরও বলেন, সে নৃত্যকলায় পড়ত তার স্বামী ভাবত তার চলাফেরা অনেক খারাপ। সে তার চুল কেটে ছোট করে হিজাব পরা শুরু করে। বিয়ের দিন থেকে ইফতেখার আমার মেয়েকে নির্যাতন করত। অত্যাচার থেকে বাঁচতে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় ইলমা। আমরা জানতাম ইফতাখারের বাবা একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা অফিসার। পরে জানি এটা তার আসল বাবা নয়। তার মা ওই সেনা অফিসারকে ২য় বিয়ে করেছেন।
তিনি বলেন, ফ্রান্সে সে একটি বিয়ে করেছিল সেখানে একটা সন্তান আছে। পরে তাকে ডিভোর্স দিয়ে আমার মেয়েকে বিয়ে করেছে। এটা জানতে পেরেছি বিয়ের পর। তারা এক ভণ্ড পীরের মুরিদ হওয়ায় আমার মেয়েকে সবসময় আটকে রাখত। বাইরে বের হতে দিত না। ১১ ডিসেম্বর ইফতেখার দেশে এসেছে সেটা আমরা জানতাম না। তার (ইলমার) মোবাইলে সবসময় চেক করত আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করত কি না। শেষ পর্যন্ত তারা আমার মেয়েকে নির্যাতন করে মেরেই ফেলল। আমি এই হত্যার বিচার চাই।
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার ইলমাকে প্রথমে গুলশানে ইউনাইটেড হসপিটালে নেওয়া হয়েছিল। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য তার মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।চার বোনের মধ্যে ইলমা চৌধুরী (২৫) ছিলেন বড়।
এ ঘটনায় গত মঙ্গলবার রাতেই ইলমার বাবা সাইফুল ইসলাম চৌধুরী বাদী হয়ে বনানী থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় ইলমার স্বামী, শ্বশুর ও শ্বাশুড়িকে আসামি করা হয়।
বিএসডি/জেজে