জবি প্রতিনিধি:
স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও বিজয় দিবস উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে এবং মুক্তমঞ্চ পরিষদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এর প্রযোজনায় মুজিব মঞ্চে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিরুদ্ধে উন্নয়ন নাট্য (প্রায়োগিক নাটক) “সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প” নাটকের দ্বিতীয় মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হয়।
গত শুক্রবার(১৭ ডিসেম্বর) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে এই নাটকটি মঞ্চায়িত হয়। নাটকটির রচনা ও নির্দেশনায় ছিলেন নাঈম রাজ (সভাপতি, মুক্তমঞ্চ পরিষদ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়)। নাটকটিতে অভিনয় করেন সজীব রায়, সৌরভ বিশ্বাস(রুদ্র), বিথী রাণী মন্ডল, রাকিবুল ইসলাম নিলয়, উম্মি হানি, কপোতাক্ষী নূপুরমা সিঞ্চি, আনুষ্কা দেবনাথ।আলোক পরিকল্পনায় ছিলেন মাহবুবুর রহমান,আলোকচিত্রী ছিলেন অমিত রায়, আহব সঙ্গীতে ছিলেন মামদুদুর রহমান মুক্ত।
সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন সৌরভ দেব, সাবিত সিয়াম, হোসাইন নবুয়ত, আরাফাত আমান, কাদেরুজ্জামান কমল। “সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প” সম্পর্কে নাট্যকার ও নির্দেশক নাঈম রাজ বলেন, বাংলাদেশের এই সূবর্ণজয়ন্তীতে এসেও আমরা শুনি সাম্প্রদায়িক সহিংসতার গল্প। দেখি বিভৎস লেলিহান রক্তাক্ততা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তবে কি আমরা ভুলতে বসেছি? ভুলতে বসেছি সোনার বাংলা বিনির্মাণের স্বপ্নগুলো? যদি তাই না হবে তবে কেন বিগত দিনগুলোতে এতো সাম্প্রদায়িক সহিংসতা সংগঠিত হলো? এসব প্রশ্নের জবাব কে দিবে? ধর্ম নিয়ে কেন ব্যবসা হচ্ছে? কিছু কুচক্রী, ষড়যন্ত্রকারী, অসাধু, বিবেকবর্জিত, স্বার্থন্বেষী মানুষ ধর্মকে কেন হাতিয়ার করছে? রাষ্ট্রের রন্ধ্রে রন্ধ্রে আজ ধর্মের নামে অপরাজনীতির চর্চা প্রবাহমান; এসবের জন্য কারা দায়ী? কি করে এসব বন্ধ হবে? সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বন্ধে প্রতিটি মানুষের দায়িত্ব কি? আমরা এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছি “সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প” নাটকের মধ্য দিয়ে। অগাস্ত বোয়ালের উন্নয়ন নাট্যের আঙ্গিকে আমরা দর্শকের সাথে যুক্ত থেকে নাটকটি মঞ্চায়ন করেছি। দর্শকদের উচ্ছ্বসিত সহযোগিতা পেয়ে আমরা অনেক কৃতজ্ঞ।
উল্লেখ্য, গত ২৮ নভেম্বর(রবিবার) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বরে নাটকটি প্রথম প্রদর্শিত হয়। নাটকের প্রথম প্রদর্শনীতেই মানুষের উপচে পড়া ভিড় দেখা যায় এবং দর্শকের সাড়াও মেলে বর্ণনাতীত ভাবে। নাট্যকার ও নির্দেশক নাটকটি সম্পর্কে আরো বলেন, বাংলাদেশের ৫০ বছর পূর্তিতে আমি এই স্বপ্ন দেখি, “বাংলাদেশ হবে অসাম্প্রদায়িক, সুন্দর ও ভ্রাতৃত্বময় এক সত্যিকারের সোনার বাংলাদেশ।” যেখানে মানুষ স্বাধীন ভাবে ধর্ম পালন করবে। কেউ কারো ধর্ম নিয়ে হীনমন্যতা অনুভব করবে না। ধর্মের বলি হয়ে আর কোন মা-বাবা সন্তান হারা হবেন না, বোন ভাই হারা হবেন না, সন্তান এতিম হবেন না, স্ত্রী বিধবা হবেন না। পূর্ব দিগন্তের মতোই আমাদের এই সোনার বাংলা এগিয়ে যাবে শান্তির আলোকবর্তীকা নিয়ে।
বিএসডি/জেজে