বুরকিনা ফাসোতে সন্দেহভাজন সন্ত্রাসী হামলায় নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়ে ১৩৮–এ পৌঁছেছে। পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশে ২০১৫ সালের পর এটিই বড় ধরনের সহিংস ঘটনা। স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার এ হামলা হয়েছে। খবর এএফপির।
জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফান দুজেরিক এক বিবৃতিতে বলেছেন, গুতেরেস এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। জাতিসংঘের সদস্যদেশগুলোকে সন্ত্রাস দমনে সমর্থন দিতে আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, বুরকিনা ফাসোর সরকারের প্রতি জাতিসংঘের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।
বুরকিনা ফাসোর প্রেসিডেন্ট রচ মার্ক ক্রিশ্চিয়ান কাবোরে মালি ও নাইজারের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ওই হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন। সেখানে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আল–কায়েদা ও ইসলামিক স্টেট জঙ্গি দলের যোগসাজশ রয়েছে।
স্থানীয় এক কর্মকর্তা গতকাল সন্ধ্যায় জানান, আহত অনেকে মারা গেছেন। আরও মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ পর্যন্ত নিহত মানুষের সংখ্যা বেড়ে ১৩৮–এ পৌঁছেছে। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, মরদেহগুলোকে গণকবর দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, রাতভর সশস্ত্র হামলাকারীদের হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
বুরকিনা ফাসোর প্রেসিডেন্ট কাবোরে বলেন, ‘সংস্কারবিরোধী এসব বাহিনীর বিরুদ্ধে আমাদের অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’ তিনি সোলহান গ্রামের হত্যাযজ্ঞকে বর্বর ও ঘৃণ্য বলে চিহ্নিত করেন।
হামলার এ ঘটনার পরে বুরকিনা ফাসোতে তিন দিনের জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। আগামীকাল সোমবার রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে এই শোক শেষ হবে। সরকার জানিয়েছে, সন্ত্রাসীরা সব বয়সের নাগরিকদের হত্যা করেছে। তাঁদের ঘরবাড়ি ও বাজারে থাকা দোকানপাট আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর একটি সূত্র বলছে, নিহত মানুষের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
গত শুক্রবার রাতভর নাইজার সীমান্তসংলগ্ন ইয়াগহা প্রদেশের সোলহান গ্রামের বাসিন্দাদের ওপর হামলার এ ঘটনা ঘটে।
এ বছরের শুরু থেকে পশ্চিম আফ্রিকার সাহেল অঞ্চলে আল-কায়েদাসহ অন্যান্য সশস্ত্র সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনা বেড়ে গেছে। হামলার শিকার হচ্ছেন বুরকিনা ফাসোর একাংশ, মালি ও নাইজারের সাধারণ লোকজন। সহিংসতা ও হামলায় গত দুই বছরে বুরকিনা ফাসোয় ১১ লাখ ৪০ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
হামলা থেকে বাঁচতে পার্শ্ববর্তী মালি থেকে আসা ২০ হাজারের মতো শরণার্থীকেও আশ্রয় দিয়েছে দেশটি। সশস্ত্র হামলার প্রতিক্রিয়ায় সে মাসেই বড় ধরনের অভিযান চালায় দেশটির সেনাবাহিনী। সাহেল অঞ্চলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড মোকাবিলায় মালি, চাদ, মৌরিতানিয়া, নাইজার ও বুরকিনা ফাসোর সেনাবাহিনীকে সহায়তা দিচ্ছে ফ্রান্সের সেনাবাহিনী।