‘ও আমার খুব আদরের মেয়ে ছিল। আমার তিন ছেলে, এক মেয়ে। বড় আদরের ছিল মেয়েটা। মেয়েটার আগে থেকেই একটু শ্বাসকষ্ট ছিল।’ মেয়ের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর এভাবেই শোক জানাচ্ছিলেন বাবা মো. আলতাফ উদ্দীন।
রাজধানীর আজিমপুর স্টাফ কোয়ার্টারের একটি বাসায় ইশরাত জাহান তুষ্টি (২০) নামের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। দীর্ঘ সময় বাথরুমে থাকায় ইশরাতের রুমমেট ও বন্ধুরা ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন। আজ রোববার ভোরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বাসাটির বাথরুম থেকে ইশরাতকে উদ্ধার করেন। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
ইশরাতের বাবা কৃষিকাজের পাশাপাশি ব্যবসা করেন। নেত্রকোনা থেকে টেলিফোনে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ইশরাত ওই বাসায় মাত্র তিন থেকে চার দিন আগে উঠেছিলেন। ফোন করে জানিয়েছিলেন, বাসাটা খুব সুন্দর। আগের বাসার চেয়ে ১০০ টাকা বেশি ভাড়া দিতে হবে। সবাই মিলে সুখ-শান্তিতে আছেন। আলতাফ উদ্দীন তখন হেসে মেয়েকে বলেছিলেন, টাকা যা লাগে লাগুক, মেয়ের পছন্দ হয়েছে, এটাই বড় কথা।
আলতাফ উদ্দীন জানান, মেয়ের সঙ্গে প্রায় প্রতিদিনই মুঠোফোনে কথা হতো। গতকাল শনিবার এক আত্মীয়ের বিয়ে ছিল বলে মেয়ের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়নি। এই আফসোস যাচ্ছে না আলতাফ উদ্দীনের। মেয়ে কীভাবে মারা গেলেন, তা নিশ্চিত নন এই বাবা। তবে নিজেকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন—‘মেয়েকে আল্লাহ নিয়ে গেছেন।’
শরীর খারাপ থাকায় আলতাফ উদ্দীন ঢাকায় আসতে পারেননি। মেয়ের লাশ নিতে অন্য আত্মীয়রা ঢাকায় এসেছেন। বাড়িতে মেয়ের লাশের অপেক্ষায় আছেন বাবা।
ইশরাতের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে রয়েছে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের (২০১৮-১৯) শিক্ষার্থী ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে সংযুক্ত ছিলেন তিনি। হল বন্ধ থাকায় ইশরাত ও তাঁর এক বান্ধবী আজিমপুর স্টাফ কোয়ার্টারের ১৮ নম্বর ভবনের নিচতলায় থাকতেন।