ভারতে করোনায় সংক্রমিত রোগী শনাক্ত ও মৃত্যু নিম্নমুখী। দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ১ লাখ ৬৩৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে, যা গত দুই মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ২ হাজার ৪২৭ জন, যা আগের দিনের চেয়ে কম। আজ সোমবার এনডিটিভি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
সবশেষ এই তথ্য নিয়ে ভারতে করোনায় সংক্রমিত মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ কোটি ৮৯ লাখ ৯ হাজার ৯৭৫। মারা যাওয়া ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪৯ হাজার ১৮৬।
ভারতে টানা ১৪ দিন ধরে ১০ শতাংশের নিচে করোনা শনাক্ত হচ্ছে। শনিবারের চেয়ে গতকাল রোববার ১২ শতাংশ কম শনাক্ত হয়েছে। শনিবার ১ লাখ ১৪ হাজার ৪৬০ জন শনাক্ত হন। মারা যান ২ হাজার ৬৭৭ জন। শুক্রবার প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার শনাক্ত হন। মারা যান ৩ হাজার ৩৮০ জন। বৃহস্পতিবার ১ লাখ ৩২ হাজার ৩৬৪ জন শনাক্ত হন। মারা যান ২ হাজার ৭১৩ জন। বুধবার শনাক্ত হন ১ লাখ ৩৪ হাজার ১৫৪ জন। মারা যান ২ হাজার ৮৮৭ জন। মঙ্গলবার শনাক্ত হন ১ লাখ ৩২ হাজার ৭৮৮ জন। মারা যান ৩ হাজার ২০৭ জন। গত সোমবার শনাক্ত হন ১ লাখ ২৭ হাজার ৫১০ জন। মারা যান ২ হাজার ৭৯৫ জন।
গত মার্চের মাঝামাঝিতে ভারতে এক দিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ২০ হাজারের কাছাকাছি। তারপর দেশটিতে সংক্রমণ লাফিয়ে বাড়ে। গত মাসে ভারতে এক দিনে সর্বোচ্চ ৪ লাখ ১৪ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হন।
৪ এপ্রিল ভারতে করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দুই কোটির মাইলফলক ছাড়ায়। ২৩ মে করোনায় মৃত্যু তিন লাখের মাইলফলক ছাড়ায়।
৩০ এপ্রিল ভারতে প্রথম এক দিনে চার লাখের বেশি মানুষের করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ে। তারপর একাধিক দিন দেশটিতে চার লাখের বেশি রোগী শনাক্ত হন। ৭ মে ভারতে প্রথম এক দিনে করোনায় চার হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। তারপর একাধিক দিন দেশটিতে চার হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়।
ভারতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যে নতুন সংকট হিসেবে দেখা দিয়েছে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস। দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণ বাড়ছে। এ সংক্রমণের জেরে মৃত্যুও হচ্ছে।
বিশ্বের কোনো দেশে এক দিনে সর্বোচ্চসংখ্যক করোনা রোগী শনাক্তের রেকর্ড ভারতের দখলে। ২২ এপ্রিলের আগপর্যন্ত এ রেকর্ড যুক্তরাষ্ট্রের দখলে ছিল। যুক্তরাষ্ট্রে গত জানুয়ারিতে এক দিনে সর্বোচ্চ ২ লাখ ৯৭ হাজার ৪৩০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল।
ওয়ার্ল্ডোমিটারস শুরু থেকেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের করোনাবিষয়ক হালনাগাদ তথ্য দিয়ে আসছে। ওয়ার্ল্ডোমিটারসের সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের পরেই রয়েছে ভারত। ভারতের পর রয়েছে ব্রাজিল। আর মৃত্যুর দিক দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রাজিলের পরই রয়েছে ভারত।
ভারতে সংক্রমণ ‘বিস্ফোরণের’ জন্য করোনার ভারতীয় ধরনকে অনেকাংশে দায়ী করা হয়। করোনার ভারতীয় ধরনগুলোর মধ্যে একটিকে ‘উদ্বেগজনক’ হিসেবে বিবেচনা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
করোনা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতির মুখে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। পাশাপাশি টিকাদান কার্যক্রম জোরদার করা হয়। গত ১ মে থেকে সব প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিককে (১৮ বছরের ঊর্ধ্বে) টিকাদানের কর্মসূচি হাতে নেয় ভারত।
এনডিটিভির তালিকা অনুসারে, ভারতে করোনার সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি মহারাষ্ট্রে। তারপর রয়েছে কর্ণাটক, কেরালা, তামিলনাড়ু, অন্ধ্র প্রদেশ, উত্তর প্রদেশ, দিল্লি, পশ্চিমবঙ্গ, ছত্তিশগড়, রাজস্থান, গুজরাট, ওডিশা ও মধ্যপ্রদেশ।